পশ্চিম মেদিনীপুর : নিম্নচাপের জেরে টানা বর্ষণের ফলে কেলেঘাই নদীর জল বেড়ে বিপত্তি। প্লাবনের ফলে সবংয়ে দুই মহিলা এবং বেলদা থেকে এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করল পুলিশ।
কেলেঘাই নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা। প্লাবিত পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া, পটাশপুর, ভগবানপুর প্রভৃতি এলাকাও। ফাটল দেখা দিয়েছে কেলেঘাই-কপালেশ্বরী’র একাধিক নদীবাঁধে। গ্রামের পর গ্রাম এখনও জলের তলায়। আরও বড় বিপর্যয়ের প্রহর গুনছেন লক্ষ লক্ষ অসহায় মানুষ। শুধু পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় বন্যা দুর্গত প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ। এর মধ্যে, খড়্গপুর মহকুমার সবং, ডেবরা, পিংলা, বেলদা, ও নারায়ণগড়, প্রভৃতি এলাকাগুলি বন্যা বিপর্যস্ত। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছে এন.ডি.আর.এফ। প্রায় ১ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। এই বন্যার ফলে দুই মহিলার মৃত্যু হয়েছে সবংয়ে এবং এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বেলদা এলাকায়।
আরও পড়ুন : নিম্নচাপের জের, প্রবল বর্ষণে ভাসছে গ্রাম-বাংলা
সবংয়ের ৫ নং সারতা অঞ্চলের বনাই গ্রামের এক বৃদ্ধা রাজবালা করের মৃত্যু হয়েছে দেওয়াল চাপা পড়ে। বৃহস্পতিবার রাতে নিজের মাটির ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন রাজবালা। গভীর রাতে দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয় তাঁর। স্থানীয়রা তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে। অন্যদিকে, জলে তলিয়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে ২ নং অঞ্চলের নন্দপুরার মেনকা সিঙ্গিয়া নামে ৪৫ বছর বয়সী এক মহিলার। দেহ দু’টি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। এন.ডি.আর.এফ-এর সাহায্যে বাঘুই খালের জলে ভেসে যাওয়া এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করে বেলদা থানার পুলিশ। বন্যাকবলিত নারায়ণগড় ব্লকের হেমচন্দ্র এলাকার বাসিন্দা কালীপদ মাইতি (৩৮) বুধবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন। শুক্রবার খাকুড়দার গোবিন্দপুর এলাকায় বাঘুই খাল থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে এন.ডি.আর.এফ ও বেলদা থানার পুলিশ। দেহ পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। এর ফলে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় বন্যার প্রকোপে মৃত্যু বেড়ে হল ১০। শুধু কেলেঘাই কপালেশ্বরী নয়, বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে কংসাবতী ও শিলাবতী নদীর জলও। সব মিলিয়ে জেলার পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ। এরই মধ্যে শনিবার-রবিবার থেকে ফের নতুন একটি নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। ফলে, এর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে দুই মেদিনীপুরে।