কৃষ্ণগঞ্জ : স্কুল বন্ধ থাকায় মোবাইলের প্রতি আসক্তি বাড়ছে ঘরবন্দি পড়ুয়াদের।
করোনা আবহে প্রায় দু’বছর ধরে বন্ধ রয়েছে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্কুল ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যার ফলে কার্যত ঘরবন্দী হয়ে পড়েছে বিভিন্ন বয়সী স্কুল পড়ুয়ারা। স্বাভাবিক স্কুল জীবনের পঠন-পাঠনের পাশাপাশি খেলাধুলা, বিনোদন থেকে বঞ্চিত হয়ে এক প্রকার সাথীহারা অবস্থায় বর্তমানের একাকিত্ব জীবন যাপন করতে হচ্ছে শিশু থেকে কিশোর এবং বিভিন্ন বয়সী ছাত্র-ছাত্রীদের। যার ফলে গৃহবন্দি অবস্থায় সরাসরি এর বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে শিশুমনে।
করোনা অতিমারির প্রভাবে স্বাভাবিক স্কুলজীবনকে হারিয়ে এই মুহূর্তে গৃহবন্দি ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে বিনোদনের একমাত্র অবলম্বন হয়ে উঠেছে মোবাইল ফোন। ফলে প্রতিনিয়ত মোবাইলের প্রতি আসক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের অসচেতন শিশু মনে। ভয়াবহ এই পরিস্থিতি দীর্ঘদিন চলতে থাকলে আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ গড়ার ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের অপব্যবহার যে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে, তা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত শিক্ষাবিদ থেকে বিশেষজ্ঞরা। স্কুল খোলা থাকলে দিনের একটা বড় সময় ছাত্র-ছাত্রীদের পঠন পাঠন ও খেলাধুলার মধ্যে দিয়ে স্কুলে কেটে যায়। ফলে ছাত্র-ছাত্রীদের বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে সাহায্য করে স্কুলের আনন্দময় অনুকূল পরিবেশ যা তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে বৃদ্ধি ঘটাতে সাহায্য করে। গঠনমূলক শিক্ষাব্যবস্থা ও উন্নতমানের ছাত্রসমাজ গড়ে তোলার কথা মাথায় রেখে গতানুগতিক পঠন-পাঠনের পদ্ধতিকে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে ছাত্রছাত্রীদের কাছে আনন্দদায়ক ও সহজলভ্য করে তুলতে এরই মধ্যে অত্যাধুনিক আনন্দদায়ক শিক্ষাদানের একাধিক কর্মসূচি গ্রহণ করতে দেখা গিয়েছে সরকারকে। যা শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র-ছাত্রীদের সার্বিক বিকাশ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। কিন্তু করোনা আবহে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় গঠনমূলক শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি শৈশবের স্কুল জীবন থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের। যা রীতিমতো মানসিক অবসাদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীদের মনে। আর এই একাকীত্ব ও মানসিক অবসাদ ভুলতে গিয়ে মোবাইল গেম ও কম্পিউটারের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে গোটা ছাত্রসমাজ।
আরও পড়ুন : আপনিও কি ইন্টারনেটে আসক্ত?
দিনের মধ্যে বেশিরভাগ সময়ে ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের ব্যস্ত রাখছে মোবাইলে গেম খেলে কিংবা ঘণ্টার পর ঘণ্টা কম্পিউটার টেবিলের সামনে বসে থেকে। যা আগামীতে শিক্ষা ও সমাজ ব্যবস্থায় অন্ধকারাচ্ছন্ন দিন ডেকে আনতে পারে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে বলে জানাচ্ছেন শিক্ষাবিদ ও বিশেষজ্ঞদের একাংশ। এছাড়াও বর্তমান দৈনন্দিন জীবনে গৃহবন্দী ছাত্র-ছাত্রীদের শিশুসুলভ আচরণ ও মানসিক পরিবর্তন ঘটতে দেখে স্বাস্থ্যবিধিকে মান্যতা দিয়ে অবিলম্বে স্কুল খোলার জন্য আবেদন জানাতে শুরু করেছেন তাদের অভিভাবকরা। সেই সঙ্গে পুনরায় স্কুল খোলার মধ্য দিয়ে শিশুরা তাদের স্বাভাবিক শৈশব জীবনে ফারুক, এমনটাই চাইছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন : অনলাইন গেমে বরবাদ ৪০ হাজার টাকা, মায়ের বকা খেয়ে আত্মঘাতী কিশোর