সিউড়ি: দেউচা পাঁচামির প্রস্তাবিত কয়লাখনি প্রকল্পের আদিবাসী ও বাসিন্দাদের সঙ্গে বুধবার দেখা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি জমি জীবন জীবিকা ও প্রকৃতি বাঁচাও মহাসভার আন্দোলনের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। শুভেন্দু বলেন, স্থানীয় আদিবাসীদের জমি-জঙ্গল থেকে উচ্ছেদ করা কিছুতেই চলবে না। লিখে রাখুন, দেউচা পাঁচামি ক্লোজড চ্যাপ্টার। তিনি জানান, ৮ মের পর বিজেপি দেউচা পাঁচামিতে উচ্ছেদ বিরোধী পদযাত্রা করবে। এই আন্দোলন চলতেই থাকবে। বিরোধী দলনেতা সবাইকে জোটবদ্ধ থাকতে বলেন।
এদিন এর আগে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী দেউচা পাঁচামিতে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রকৃতি বাঁচাও মহাসভার আদিবাসী সদস্যরা অধীরকে ঢুকতে দেননি। তাঁরা জানান, কোনও রাজনৈতিক দলকে এই আন্দোলনে নাক গলাতে দেওয়া হবে না। যদিও অধীর তাঁকে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। অধীরকে বাধা দিলেও বিকেলে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু কিন্তু বিনা বাধাতেই দেউচায় চলে যান। তা নিয়ে নানা প্রশ্নও উঠেছে। তাঁর সঙ্গে বিজেপির কয়েকজন বিধায়কও ছিলেন।
বীরভূমের দেউচা পাঁচামিতে তৈরি হতে চলেছে দেশের সর্ববৃহৎ কয়লা খনি৷ এই প্রকল্পে ৩৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হওয়ার কথা৷ তাতে কর্মসংস্থান হবে লক্ষাধিক মানুষের৷ রাজ্য সরকারের এই কয়লা খনি-বন্দর প্রকল্পে সাধারণ মানুষের সমস্যা হবে বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা৷ যদিও ইতিমধ্যে দেউচা পাঁচামির জমিদাতাদের নবান্নে ডেকে ক্ষতিপূরণ এবং চাকরি দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। মাসখানেক আগেই ২০৩ জনকে জমির পাট্টা ও চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: বিধানসভায় বরখাস্ত, স্পিকারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে শুভেন্দু
সম্প্রতি আন্দোলনকারী প্রকৃতি বাঁচাও মহাসভার পক্ষে ৯জনের এক প্রতিনিধিদল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নবান্নে বৈঠক করে। বৈঠক থেকে বেরিয়ে প্রতিনিধিরা জানান, আলোচনায় তাঁরা খুশি। এলাকায় ফিরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী কর্মসূচী স্থির করা হবে। যদিও নবান্নে ওই বৈঠক নিয়ে মহাসভার অন্দরেই বিতর্ক ওঠে। সংগঠনের এক নেতা জানান, কোনও একজন ব্যক্তি বিশেষ স্বার্থ নিয়ে ওই বৈঠকের ব্যবস্থা করেন। তাতে আদিবাসীদের কোনও সায় ছিল না। উচ্ছেদ বিরোধী আন্দোলন চলবে।
গত সোমবারই দেওয়ানগঞ্জে জমিদাতাদের হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেওয়ার জন্য একটি সরকারি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু আদিবাসীদের সশস্ত্র মিছিল থেকে বাধা দেওয়ায় সেই সরকারি অনুষ্ঠান ভেস্তে যায়। আদিবাসীদের তাড়া খেয়ে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বাস ফিরে আসে।