জলপাইগুড়ি: ময়নাতদন্তের পর রেল দুর্ঘটনায় (Maynaguri Train Accident) নিহতদের দেহ তুলে দেওয়া হল পরিবারের হাতে৷ সরকারি হিসেবে, ময়নাগুড়ির ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় মোট ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ যাদের মধ্যে ৬ জন পুরুষ৷ বাকি তিনজন মহিলা৷ শুক্রবার ময়নাতদন্ত শেষে মর্গ থেকে কয়েকজনের দেহ কফিনবন্দি করে তাঁদের বাড়ির উদ্দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়৷ কেউ কেউ মৃতদেহ নিতে মর্গেই চলে আসেন৷ তবে মৃতদেহ কাছে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের লোকজন৷
রেলের তরফে জানানো হয়েছে, নিহতদের মধ্যে দু’জন কোচবিহারের বাসিন্দা৷ তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ২৩ বছরের চিরঞ্জিত বর্মন৷ বাড়ি কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের কোতোয়ালি থানার অন্তর্গত চান্দামারি এলাকায়৷ পরিবারের সদস্য বলতে কেবল বাবা-মা৷ বাবা মানসিক ভারসাম্যহীন৷ মা বিড়ি বেধে কোনরকমে সংসার চালান৷
চার মাস আগে চিরঞ্জিতের গলব্লাডারে স্টোন ধরা পড়ে৷ চিকিৎসক তখন জানান, অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন রয়েছে৷ অপারেশনের জন্য লাগবে ৫০ হাজার টাকা৷ অভাবের সংসারে অত টাকা কীভাবে জোগাড় হবে তা ভেবেই চিন্তায় পড়ে যান চিরঞ্জিত৷ ঠিক করেন, ভিনরাজ্যে গিয়ে শ্রমিকের কাজ করবেন৷ তাই মাস তিনেক আগে জয়পুর চলে যান৷ সেখানে মিস্ত্রির কাজ শুরু করেন৷
আরও পড়ুন: Maynaguri Train Accident: ট্রেন দুর্ঘটনায় আহতদের পাশে যৌনকর্মীরা, দিলেন জল ও খাবারের প্যাকেট
তিন মাসের মধ্যেই অপারেশনের টাকা জোগাড় করে ফেলেন চিরঞ্জিত৷ বাড়ি ফিরতে বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেসে ওঠেন৷ শেষবার ফোনে কথা হয় মায়ের সঙ্গে৷ তারপরই লাইনচ্যুত হয় ট্রেন৷ পরে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে ময়নাগুড়ি আসেন চিরঞ্জিতের মা৷ ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তিনি৷