কাকদ্বীপ: বিগত কয়েক বছর ধরে বাংলা জুড়ে দেখা দিয়েছে ইলিশের আকাল। দক্ষিণ ২৪ পরগনা কাকদ্বীপ, নামখানা, বকখালি, পাথরপ্রতিমাসহ বিভিন্ন মাছের বন্দর থেকে প্রায় ৫০০০ ট্রলার ইলিশ পাড়ি দেয় বঙ্গোপসাগরে। কিন্তু প্রায় বছর তিনেক হলো অপেক্ষাকৃত বড় মাছের সংখ্যা প্রায় নেই বললেই চলে। তাই ইলিশের বাজারে মন্দা দেখা দিয়েছে। ইলিশের সংখ্যা যেমন কমেছে তেমনি কমেছে ইলিশের সাইজও।
কাকদ্বীপের মৎস্যজীবী সংগঠনগুলির অভিযোগ, বেশকিছু ট্রলারে বেআইনিভাবে বটম ফিশিং টেকনোলজি বসানো হয়েছে। যে যন্ত্রের সাহায্যে জাল ফেলে গভীর সমুদ্রের তলদেশ থেকে ছোট বড় সব ধরনের মাছ তুলে নেয়া হচ্ছে। এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে নষ্ট হচ্ছে মাছের ডিম। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ৫০০ গ্রাম ওজনের নিচে ইলিশ মাছ ধরা দন্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু সেই নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কিছু অসাধু মৎস্যজীবী। অপেক্ষাকৃত ছোট ফাঁসের মাছের জাল ব্যবহার করে ছোট ইলিশ বা খোকা ইলিশ ধরে তা বিক্রি করছে আরোতে। যার ফলে বড় ইলিশের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।
আগে প্রায় ১ কেজি সাইজের ইলিশ মাছের দাম ছিল ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। এখন সেই মাছ বিকোচ্ছে ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকা কেজি দরে। যা মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। কাকদ্বীপ মৎস্যজীবি সংগঠনের তরফ থেকে অভিযান চালিয়ে কাকদ্বীপ নতুন রাস্তার মোড়ে প্রায় দশটি ছোট মাছ বোঝাই লড়ি আটক করে। এরপরে লড়িগুলিকে কাকদ্বীপ থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই মৎস্য দপ্তরের লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে। প্রতিবছরই মাছের প্রজনন বাড়াতে পয়লা এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত সরকারি ভাবে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করে মৎস্য দপ্তর। এই ৪৫ দিন সময়কে বলা হয় ব্যান পিরিয়ড। তার পরেও এই ধরনের অসাধু মৎস্যজীবীদের বেআইনি ভাবে ছোট ইলিশ মাছ ধরার ফলেই ইলিশের অভাব দেখা দিচ্ছে ভোজনরসিক বাঙালির পাতে।