জলপাইগুড়ি: নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকেই বিজেপির আভ্যন্তরে বাড়ছে প্রবল ক্ষোভ। একদিকে যেমন দলছুটদের নিয়ে ভাঙনের চিন্তায় অস্থির গেরুয়া শিবির তেমনই দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়েও উদ্বিগ্ন রাজ্য বিজেপি। দলের রাজ্যস্তর থেকে পঞ্চায়েতস্তর পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে সেই দ্বন্দের আঁচ। বুধবার তেমনই একটি ঘটনার সাক্ষী থাকল জলপাইগুড়ির খরিজা ও বেরুবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত।
বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে অচলাবস্থা তৈরি হলো জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের খারিজা বেরুবাড়ি দুই গ্রাম পঞ্চায়েতে।বিরোধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দলের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলেন বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্যরা।
আরও পড়ুন: ছাত্র বিক্ষোভ রুখতে ক্যাম্পাসে বাউন্সার, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তে বিতর্ক
বিজেপি সদস্যদের অভিযোগ, একাধিক দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান। শুধু তাই নয়, পঞ্চায়েতের সমস্ত সদস্যের মতামতকে গ্রাহ্য করে নিজেই সমস্ত কিছু সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। যা সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক। পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ডাল্টন রায়ের অভিযোগ, পঞ্চায়েতে নির্বাচিত বাকি সদস্যদের অন্ধকারে রেখে কাজ করছেন পঞ্চায়েত প্রধান। এছাড়াও পঞ্চায়েতে পাইপ কেলেঙ্কারিসহ একাধিক দুর্নীতিতে প্রধান জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
অন্যদিকে, সেই অভিযোগ খারিজ করে পঞ্চায়েত প্রধান রেবতী রায়ের দাবি, প্ররোচনায় পা দিয়ে তাঁর দলের সদস্যরা বিরোধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে অনাস্থা এনেছে। ইতিমধ্যেই বিডিওর কাছে অনাস্থা প্রস্তাব জমা করেছেন তাঁরা। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যে। প্রশাসন তদন্ত করলেই আসল সত্য সামনে আসবে বলে দাবি করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ভোট প্রচারে মোদীর কেন্দ্র বারাণসীতেও যাবেন, সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানালেন মমতা
উল্লেখ্য, জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের খারিজা বেরুবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে সদস্য সংখ্যা ১০ জন। তারমধ্যে বিজেপির সদস্যই ৭জন। তৃণমূল, সিপিএম ও ফরওয়ার্ড ব্লকের একজন করে সদস্য রয়েছেন ওই পঞ্চায়েতে। সবকিছু ঠিকঠাক মতো চললেও নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবির পর বিভিন্ন বিষয়ে পঞ্চায়েত সদস্যের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা শুরু হয় রেবতী রায়ের।
সরকারি প্রকল্পের বাস্তবায়নের ব্যাপারে একক সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। সেই সমস্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে ধীরে ধীরে ক্ষোভ বাড়তে থাকে বাকি পঞ্চায়েত সদস্যদের মধ্যে। এমন পরিস্থিতিতে এবার তারই প্রতিফলন ঘটল।