শিলিগুড়ি: হোয়াইট বোর্ডে বড় বড় করে লেখা ‘মা আই কুইট।’ তলায় লেখা দুপুর আড়াইটে। আর একটি স্মাইলি। উচ্চশিক্ষা নিয়ে মানসিক অবসাদের জেরে শিলিগুড়িতে আত্মঘাতী হলেন মেধাবী ছাত্র। নাম সোমনাথ সাহা। বাড়ি শিলিগুড়ির জ্যোতিনগরে। শিলিগুড়ি উচ্চতর বালক বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া সোমনাথ।
প্রায় দুবছর ধরে বাকিদের মতো বাড়িতে বসেই চলছিল পড়াশোনা। মঙ্গলবার বিকেলে ঘরের ভিতর থেকেই গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় উদ্ধার হয় সোমনাথের দেহ। সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছিল নিথর দেহটি। ঘরেই ছিল হোয়াইট বোর্ড। সেখানে অঙ্ক কষছিল সে। কিন্তু সেই অঙ্কটা আর মিলল না শেষ পর্যন্ত। কী থেকে কী হল, বুঝে উঠতে পারছেন না সাহা পরিবারের কেউই। সোমনাথের মা কথা হারিয়ে ফেলেছেন। বাবা অঝোরে কাঁদছেন। প্রাথমিকভাবে পরিবারের ধারণা, পড়াশোনা নিয়ে মানসিক অবসাদের কারণেই আত্মহত্যা করেছে সে। যদিও ময়না তদন্তের রিপোর্ট এখনও জানা যায়নি।
এলাকায় এবং স্কুলে যথেষ্ট মেধাবী ছাত্র বলেই পরিচিত ছিলেন সোমনাথ। স্বপ্ন ছিল পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করে পরবর্তীতে জ্যোতির্বিজ্ঞান (Astronomy)নিয়ে পড়ার। পড়াশোনা ছাড়াও আবৃত্তিতে পারদর্শী ছিলেন। অবসর সময়ে ছবিও আঁকতেন। তাঁর এই স্বপ্নের পথে বাদ সাধল মানসিক অবসাদ। অন্তত এমনটাই মনে করছেন বাড়ির লোকেরা। সোমনাথ বরাবরই পড়াশোনায় ভালো ছাত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন। মাধ্যমিকে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৯৩ শতাংশ। উচ্চ মাধ্যমিকেও ভালো ফল করে স্বপ্ন পূরণ করতে চেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: Bengal BJP: ফের বিজেপির হেঁশেলে বনভোজনের আগুন, উদ্যোক্তা শান্তনুই
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সোমনাথের শোওয়ার ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিস। পরিবার সূত্রে খবর, ওইদিন দুপুরে আর পাঁচটা দিনের মতোই সে সকলের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই মিশেছে। এরপর দুপুরে খাওয়া-দাওয়ার পর নিজের ঘরে গিয়ে পড়াশোনা করছিলেন। তবে বিকেল নাগাদ আচমকাই তাঁর ঠাকুরমা দেখতে পান ঘরের ভিতরে পাখার সঙ্গে ঝুলছে সোমনাথের দেহ। পুলিস মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠায়। বুধবার সন্ধ্যায় সোমনাথের দেহ আনা হয় বাড়িতে। মেধাবী ছাত্রের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা এলাকা।
বাবা সুবীর সাহা বলেন, ছেলে পড়াশোনা নিয়েই থাকত। নিজের পড়াশোনা নিয়ে খুব চিন্তিতও ছিল সে। দুপুরে সবার সঙ্গে সময় কাটিয়ে নিজের পড়ার ঘরে গিয়ে পড়াশোনা করছিল। তারপরে বিকেল নাগাদ এই ঘটনা।