হাওড়া: নাবালিকার অভিযোগের ভিত্তিতে সালকিয়ার এক বেসরকারি হোমের বড়সড় কেলেঙ্কারি ফাঁস করল পুলিশ৷ অভিযোগ, হোমের আড়ালে চলছিল শিশুদের উপর যৌন নির্যাতন৷ এমনকী শিশু পাচারের মত ঘটনাও ঘটেছে বলেও অভিযোগ৷ নাবালিকার অভিযোগের ভিত্তিতে হাওড়া পুলিশ সালকিয়ার ওই বেসরকারি হোমে তল্লাশি চালায়৷ অন্তত ২০টি শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে৷ গ্রেফতার করা হয়েছে হোমের মালিক গীতশ্রী অধিকারী-সহ ৯ জনকে৷ এক ডব্লুবিসিএস অফিসারের জড়িত থাকারও জোরাল প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ৷
এই গীতশ্রী অধিকারীর সঙ্গে হাওড়া পুরসভার ঘনিষ্ঠ যোগের প্রমাণ মিলেছে৷ ধৃতের শাশুড়ি মিনতি অধিকারী পুরসভার ডেপুটি মেয়র ছিলেন৷ ঘটনার পর তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ৷ সংবাদমাধ্যমকে নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা জানিয়েছেন, রাজনৈতিক রঙ না দেখে পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে৷
আরও পড়ুন: গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যু ৫ শিশুর, হাসপাতালের গাফিলতির প্রতিবাদে রাস্তায় নামলেন অভিভাবকরা
আড়াই বছর আগে সালকিয়ার মালিপাঁচঘরা থানা এলাকার করুণা হোম থেকে এক নাবালিকাকে দত্তক নেয় একটি পরিবার৷ কয়েকদিন আগে মেয়েটি তার দত্তক নেওয়া বাবা-মাকে যৌন নির্যাতনের কথা জানায়৷ বাবা-মাকে সে বলে, ওই হোমে তাকে শারীরিক নিগ্রহ করা হত৷ মেয়ের মুখে এসব শুনে ওই দম্পতি হাওড়া মহিলা থানায় অভিযোগ জানায়৷ তার পরই শিশুকল্যাণ দফতরের এক টিমকে সঙ্গে নিয়ে শুক্রবার রাতে ওই হোমে অভিযান চালায় পুলিশ৷
অভিযান চলাকালীন পুলিশ জানতে চায়, হোমে কতজন শিশু রয়েছে৷ সূত্রের খবর, হোমের কর্মীরা নানা তথ্য দিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে৷ পুলিশ হোমের নথিপত্র খতিয়ে দেখতে চায়৷ নথিপত্রে আরও অসঙ্গতি ধরা পড়ে৷ জানা গিয়েছে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী হোমে যত সংখ্যক শিশুর থাকার কথা তার থেকে বেশি শিশুর খোঁজ মেলে৷ এর পরই হোমের মালিক গীতশ্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ৷
আরও পড়ুন: বিধায়ক দিবাকর ঘরামির খোঁজে পোস্টার, বিজেপি বলল, দলে টানতে না পেরেই কুৎসা রটাচ্ছে তৃণমূল
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, হোম থেকে লক্ষ লক্ষ টাকায় বাইরে শিশু পাচার হয়েছে৷ যৌন হেনস্থার অভিযোগ খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা৷ কেননা, স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই হোমে বাইরে থেকে অনেক লোকজন আসত৷ স্থানীয়দের অনুমান, হোমের ভেতর বেআইনি কাজকর্ম হত৷ শাশুড়ি হাওড়া পুরসভা ডেপুটি মেয়র বলে গীতশ্রী সেই ক্ষমতার ফায়দা নিতেন বলে অভিযোগ৷ সহজেই তিনি দত্তক নেওয়া শিশুদের জন্মের শংসাপত্র বের করে ফেলতেন৷ তাই গীতশ্রীর এই কাজে মিনতিদেবীর হাত রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷