চন্দ্রকোনা: ফের চন্দ্রকোনায় আত্মঘাতী কৃষক! একদিকে আলু চাষে ব্যাপক ক্ষতি, অন্যদিকে ঋণের বোঝা। দুইয়ের মাঝে পড়ে আত্মঘাতী হলেন আলুচাষি। মঙ্গলবার গভীর রাতে আলুর জমিতে বিষ খেয়ে পড়ে থাকতে দেখে উদ্ধার করেন প্রতিবেশীরা। রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও বুধবার ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়।
পরিবার ও প্রতিবেশীদের দাবি, অত্যধিক ঋণের চাপে ও ফসলের লোকসান হওয়ার পর মানসিকভাবে চাপে ছিলেন ওই কৃষক চন্দ্রকোনার যদুপুরের বাসিন্দা মৃত রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী(৬০)। চলতি মরশুমে কয়েক দফায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে আলুচাষে। ব্যাঙ্ক থেকে চাষের জন্য মোটা টাকা ঋণ নিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। পরিবারের এক প্রতিবন্ধী ছেলের জন্য চিকিৎসা করাতে এমনিতেই ঋণ ছিল। তার উপরে আলুচাষ করতে মোটা টাকা ঋণ নিয়েছিলেন ব্যাঙ্ক থেকে। কিন্তু ফসল ভালো হয়নি, নষ্ট হয়েছে বেশিরভাগটাই। চাষে ক্ষতির মাঝেই ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ শোধের নোটিস দিলেও কিস্তি পরিশোধ করতে পারেননি তিনি। যা ঘিরে দিনকয়েক ধরেই চরম মানসিক চাপে ছিলেন ওই কৃষক।
অবশেষে মঙ্গলবার রাতে বাড়ির কাছেই আলুর জমিতে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। আলুর জমিতে ব্যবহার করার বিষ খেয়েছিলেন তিনি। রাতে খুঁজতে গিয়ে স্থানীয়দের নজরে আসে। তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ও পরে সেখান থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থাতেই বুধবার ভোরে মৃত্যু হয় এই আলুচাষির।
আরও পড়ুন: Ichapur: দুর্ঘটনায় কাটা যাওয়া পায়ের বদলে কৃত্রিম পায়ের টাকা না দেওয়ায় খুন বৃদ্ধাকে, জেরায় কবুল ধৃতের
স্থানীয় বাসিন্দা জিতেন ঘোড়ইয়ের দাবি, দেনার দায়েই আত্মঘাতী হতে হল তাঁকে। প্রতিবন্ধী ছেলের চিকিৎসা, অন্যান্য কারণে এমনিতেই ঋণ ছিল। তার উপর আলুচাষে মোটা টাকা নিয়েছিলেন ব্যাঙ্ক থেকে। সেই ঋণের বোঝা সামলাতে না পেরেই আত্মঘাতী হয়েছেন।
ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, বুধবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্ত হবে আত্মঘাতী কৃষকের। আত্মহত্যার পেছনে ঋণের বোঝা নাকি অন্য কোনো কারণ তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।