ক্যানিং : মাছ চাষের জন্য দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Paragana) ক্যানিংয়ের সুনাম ছড়িয়েছে আন্তর্জাতিক স্তরেও। সেই সুনামের মুকুটে নতুন পালক যুক্ত করল রঙিন মাছের চাষ। বহু মানুষ শখ করে বাড়িতেই রঙিন মাছের চাষ করেন। ক্যানিং ১ নম্বর ব্লকের ট্যাংরাখালি কয়ালপাড়ায় সাধারণ মাছ চাষের পাশাপাশি প্রযুক্তিগত ভাবে রঙিন মাছেরও চাষ শুরু হয়েছে। দু’মাস আগে মৎস্য দফতরের সহযোগিতায় প্রায় এক বিঘা পুকুরে রঙিন মাছের চাষ শুরু করেছেন মৎস্যচাষী বিকাশ সাউ।
দু’মাস আগে ওই পুকুরে এক ইঞ্চি দৈর্ঘের গোল্ড ফিশ, ডিসকাস, অসকাস, রেড ক্যাপ, রেড আই, মিল্কি, বার্ব প্রজাতির রঙিন মাছের এক লক্ষ চারা ছাড়া হয়। কোনও রাসায়নিক সার, ওষুধ ছাড়াই সেই সব মাছ গত ৫০ দিনে বেশ হৃষ্টপুষ্ট হয়ে উঠেছে। এক একটি মাছ লম্বায় প্রায় আড়াই ইঞ্চি হয়ে গেছে। বিশেষ করে খোলা পুকুরে রঙিন মাছের এমন অস্বাভাবিক বাড়বাড়ন্তে আয়ের নতুন দিশা খুঁজে পেয়েছেন স্থানীয় মাছচাষীরা। খুশি ব্লক প্রশাসনের কর্তারাও।
আরও পড়ুন : ক্যানিংয়ের মাছ বাজারে ৭৮ কেজির তেলে ভোলা ৩৭ লাখ টাকায় বিক্রি
শস্য শ্যামলা কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের মুখ্য আধিকারিক নারায়ণ চন্দ্র সাউ জানান, চাহিদার তুলনায় রঙিন মাছের যোগান কম। সেই কারণে মৎস্যজীবীরা যদি এই চাষের সঙ্গে আরও বেশি করে যুক্ত হন, তাহলে অর্থনৈতিক ভাবে তাঁরা উপকৃত হবেন। আতমা প্রকল্পের মাধ্যমে তাঁদের সাহায্য করা হবে। ক্যানিং ১ নম্বর ব্লকের মৎস্য আধিকারিক অরুণ কুমার দেব বলেন, ‘অন্যান্য মাছ চাষের পাশাপাশি চাষীদের মাধ্যমে আমরা রঙিন মাছ চাষ শুরু করেছিলাম। কারণ রঙিন মাছের কদর রয়েছে বাজারে। রঙিন মাছ চাষ করে খুব কম সময়ে বেশি মুনাফা অর্জন করা সম্ভব। এছাড়াও রঙিন মাছ চাষ অতি লাভজনক এবং স্বনির্ভরতার একটা দিক।’ মৎস্য আধিকারিক আরও জানান, রঙিন মাছ চাষে সাফল্য আসায় আগামী দিনে এই জীবিকার প্রতি সাধারণ মানুষের ঝোঁক বাড়বে এবং কর্মসংস্থানও আরও বাড়বে। পুকুরে রঙিন মাছ চাষের সময় চাষী কোনও প্রকার বাইরের খাবার দেননি। তাছাড়াও বাজারে রঙিন মাছের তুলনায় পুকুরে চাষ করা মাছের রঙ অতি উজ্জ্বল। ফলে ক্যানিং ব্লকের অন্যান্য জায়গায় চাষীরা যাতে রঙিন মাছ চাষে আগ্রহী হয়, সে ব্যাপার আরেও বেশি করে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।’ ব্লক মৎস্য দফতরের আর এক অফিসার জানান, প্রয়োজন হলে মৎস্যজীবীদের রঙিন মাছ চাষের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
অন্যদিকে মৎস্যজীবী বিকাশ সাউ জানান, পরীক্ষামূলক ভাবে চাষ করে তিনি যথেষ্ট খুশি। অন্যান্য চাষীদেরকেও এই রঙিন মাছ চাষ করার কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। তাঁর দাবি, রোগিং মাছ চাষ জেলায় এক নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।