ঝাড়গ্রাম: করোনা পরিস্থিতিতে রক্তের প্রয়োজনীয়তা বুঝেছেন গোপীবল্লভপুরের টিকায়েৎপুরের বাসিন্দা অকেশ শর্মা। এক বিন্দু রক্তের মূল্য বুঝিয়েছে কর্মজীবনের এই দেড় বছর। তাই নিজের বিয়ের দিনটিকে সম্পূর্ণ করতেই আয়োজন করলেন রক্তদান শিবিরের। অশোক পেশায় একজন স্বাস্থ্য কর্মী।
আরও পড়ুন ‘বিভাজন বিভীষিকা স্মৃতি দিবস’ পালন মোদির দ্বিচারিতা, দাবি কংগ্রেসের
কাজের সুত্রে বারে বারে দেখেছেন এক ইউনিট রক্তের জন্য কিভাবে রোগীর আত্মীয় স্বজনদের ছুটতে হয় এক ব্লাড ব্যাংক থেকে আর একটি ব্লাড ব্যাংকে। তাই সেসব অসুস্থদের কথা মাথায় রেখেই নিজের বিয়ের বৌভাতের দিন বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠানে আয়োজন করে ফেললেন রক্তদান শিবিরের। স্বাস্থ্য কর্মী অকেশ শর্মার এই রক্তদান শিবিরে রক্তদান করেন তাঁর আত্মীয় স্বজনরা। পাশাপাশি রক্তদানে স্বেচ্ছায় এগিয়ে আসেন এলাকার উৎসাহী যুবকেরা। গোপীবল্লভপুরের টিকায়েৎপুরে তাঁর আয়োজন করা রক্তদান শিবিরে এদিন মোট ৩০ জন রক্তদাতা স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন ভুয়ো মহিলা আইপিএসকে ৫ দিনের পুলিশি হেফাজত, নির্দেশ আদালতের
প্রসঙ্গত, কয়েকবছর আগে থেকেই নয়াগ্রাম ব্লকে স্বাস্থ্য দফতরে কাজ শুরু করেন অশোক। রক্তের জন্য বহু পরিবারকেই প্রিয়জন হারা হতে দেখেছেন তিনি।একইসঙ্গে করোনা মহামারির সময় দিনের পর দিন তিনি লক্ষ্য করেছেন ব্লাড ব্যাংকে রক্তের জন্য কিভাবে মানুষকে ছুটতে হচ্ছে। দিনের পর দিন মানুষ গৃহবন্দি থাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্তদান শিবির না হওয়ায় ব্লাড ব্যাংক গুলিতে রক্তের অভাব খুব কাছ থেকে লক্ষ্য করেছেন। তাই সেই কষ্টে তাঁদের পাশে দাড়াতেই এই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেন তিনি।
আরও পড়ুন ২৭ অগস্ট পোস্তা উড়ালপুল ভাঙার কাজ শুরু
এই বিষয়ে অকেশ শর্মার জানিয়েছেন, গোপীবল্লভপুরের কমলাশোলের বাসিন্দা বর্ণালী জানার সঙ্গে অকেশ বাবুর বিয়ের সব কিছু ঠিকঠাক হতেই তখন থেকে এই ভাবনা চিন্তা শুরু করেন তিনি। বিয়েবাড়িতে কিভাবে রক্তদান শিবির করা যায় কিনা তা নিয়ে ভাবতে থাকেন অকেশ ও বর্নালি দুজনেই। তখনই পাশে পান গোপীবললভ পুরের সুবর্ণরৈখিক ভাষা পরিবার ‘আমারকার ভাষা আমারকার গর্ব’ এর সদস্যদের। তাঁদের সহযোগিতায় বিয়েবাড়ির বৌভাতের দিন আয়োজন করা হয় রক্তদান শিবিরের। সেইমতো গোপীবল্লভপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকের সহায়তায় শনিবার অকেশ শর্মার বাড়িতে রক্তদান শিবির হয়। বৌভাতের দিন এই ধরনের অনুষ্ঠান আগে না দেখা গেলেও এই প্রকার ভিন্নধর্মী সমাজসেবামূলক কাজকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাবাসীরা।একইসঙ্গে এই কাজে সকলের সাহায্য পেয়ে বেশ খুশি হয়েছেন অশোক শর্মা ।