কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: রাজ্য বিজেপির নজরে এবার মরিচঝাঁপি দ্বীপ। সোমবার সুন্দরবনের সেই দ্বীপে গিয়ে মরিচঝাঁপি দিবস পালন করল বিজেপি। নিহতদের শ্রদ্ধা জানান আসানসোল দক্ষিণের বিধায়িক অগ্নিমিত্রা পল। উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র দেবজিৎ সরকার, বিধায়ক অম্বিকা রায় সহ একঝাঁক রাজ্য ও জেলা বিজেপির নেতৃত্ব।
মরিচঝাঁপি হত্যা ঘটনায় তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে বিজেপি। বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল বলেন, প্রতিবছরই রাজ্য বিজেপি মরিচঝাঁপি দিবস পালন করে ৷ কিন্তু, ২০১১ সালে বাংলায় পরিবর্তনের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন মরিচঝাঁপির বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়াননি? তাঁর অভিযোগ, তৃণমূলের সরকার রাজনীতির স্বার্থে মরিচঝাঁপি দ্বীপের মানুষদের পাশে দাঁড়াননি ৷
দেশ ভাগের সময় বহু হিন্দু শরণার্থী বর্তমান বাংলাদেশ ছেড়ে পশ্চিমবঙ্গে চলে আসেন। উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর হিন্দু শরণার্থীরা কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য এলাকায় নিজেদের অবস্থান সুনিশ্চিত করতে পারলেও নিন্মবিত্ত শ্রেণীর হিন্দুদের পশ্চিমবঙ্গে থাকতে দেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুন: জীবিত শ্বশুরকে ‘মৃত’ দেখিয়ে কৃষকবন্ধু প্রকল্পের ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা হাতাল বউমা
১৯৭৮ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে সর্বস্ব হারানো ওই উদ্বাস্তুরা সুন্দরবনের প্রত্যন্ত মরিচঝাঁপি দ্বীপে আশ্রয় নেয়। প্রায় ত্রিশ হাজার মানুষ জঙ্গল পরিষ্কার করে একটি বাসযোগ্য বসতি গড়ে তোলে। তত্কালীন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর সরকার ঠিক করেন তাঁদের ওখানে থাকতে দেওয়া যাবে না। পুলিশ দিয়ে এই সমস্ত মানুষদে উপর শুরু হয় অত্যাচার। বহু মানুষ মারা যান। আবার ১৯৭৯ সালের ২৪ জানুয়ারী থেকে সিপিএম সরকার লাগাতর অবরোধ শুরু করে। নৌকাতে পানীয় জল খাদ্য নিয়ে যেতে দেখলে পুলিশ জীবন্ত মানুষ সহ নৌকা ডুবিয়ে দিতো। লঞ্চ থেকে অকারণে গুলি চালানো হত। খাদ্যের অভাবে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রচুর মানুষ মারা যায়। তখনও দ্বীপে প্রায় ত্রিশহাজার মানুষ রয়েছে। এরপর ৩১জানুয়ারী বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে দ্বীপে পদার্পণ করলো সিপিএম হার্মাদ বাহিনী। জমায়েত লক্ষ্য করে নির্বিচারে ছোঁড়া হয় কাঁদানে গ্যাস। শত শত মৃতদেহ মাড়িয়ে মরিচঝাঁপি দখল নেয় সিপিএম। এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্য বিজেপি ৩১ শে জানুয়ারি ঐতিহাসিক মরিচঝাঁপি দিবস পালন করে।