বিষ্ণুপুর: এবার বিজেপির দেখানো পথে শাসকদল তৃণমূল। শাসকদলের কর্মসূচিতে একই মঞ্চ থেকে দল বদল করা বিধায়ক ও পুর প্রশাসকের একে অপরকে লক্ষ্য করে তির্যক মন্তব্যে প্রকাশ্যে এল অন্তর্কলহ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বিষ্ণুপুরের রসিকগঞ্জ এলাকায় তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের ডাকা একটি কর্মিসভায় বক্তব্য রাখতে উঠে বিধায়ক ও পুর প্রশাসক নাম না করে একে অপরের বিরুদ্ধে তির্যক মন্তব্য ছুড়ে দেন। এদিনের সভায় পুর প্রশাসক অর্চিতা বিদ বলেন, দলের নেত্রীর প্রতি আস্থা না রেখে অনেক মেরুদণ্ডহীন মানুষ দল ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। এই বক্তব্য তন্ময় ঘোষকে ইঙ্গিত করে বলেছেন বলে ধারণা রাজনৈতিক মহলের। অর্চিতা বিদের পরে বক্তব্য রাখেন বিধায়ক তন্ময় ঘোষ। তিনি বলেন, পুরসভা নির্বাচনে মাসির রাগ মায়ের উপর ঝাড়বেন না। নিজেকে ভূমিপুত্র বলেও দাবি করেন বিধায়ক। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, বিধায়ক নিজেকে ভূমিপুত্র পরিচয় দিয়ে আসলে বড়জোড়ার বাসিন্দা ও বহিরাগত বলে পুর প্রশাসক অর্চিতা বিদকে খোঁচা দিয়েছেন।
একই মঞ্চে দুজনের এই বক্তব্যকে ঘিরে অর্চিতা ও তন্ময়ের মধ্যে যে ঠান্ডা লড়াই চলছে তা প্রকাশ্যে এল। যদিও কেউ কারও নাম করেননি। তবে নিশানা যে দুজনের পরিষ্কার তা বোঝা গিয়েছে। যদিও পরে বিধায়ক ও পুর প্রশাসক দুজনেই বিশেষ কোনও ব্যক্তিকে উদ্দেশ করা মন্তব্য বলে মানতে নারাজ।
২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে দল বদল করে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে বিজেপির প্রার্থী হন তন্ময় ঘোষ। তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে বিষ্ণুপুরের মাটিতে লড়াইয়ে শামিল হন অর্চিতা বিদ। যদিও বিষ্ণুপুরের মাটিতে শেষ হাসি হেসেছিলেন তন্ময় ঘোষ। বিজেপির টিকিটে জয়ী হয়ে পরে ঘাসফুলের পতাকা ধরেন তন্ময়। অন্যদিকে ভোটে হেরে যাওয়ার পরে বিষ্ণুপুর পুরসভার প্রশাসকের আসনে বসানো হয় অর্চিতা বিদকে।
আরও পড়ুন- Shantanu Thakur: মমতার শিলান্যাস করা প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ শান্তনু
রাজনৈতিক মহলের মতে, তন্ময়ের তৃণমূলে যোগদানের পর থেকে বিষ্ণুপুরের মাটিতে পুর প্রশাসক অর্চিতা বিদের সঙ্গে ঠান্ডা লড়াই শুরু হয়ে যায়। দুজনেই ঘাসফুল শিবিরে থাকলেও পুরসভা নির্বাচনের আগে বিষ্ণুপুরের বিধায়ক ও প্রশাসক কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ তার প্রমাণ মিলল এদিন।
তৃণমূল জেলা নেতৃত্বের দাবি, পরিবার বড় হলে একটু সমস্যা হয়েই থাকে। পুরসভায় দলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হলেই এই সমস্যা আর থাকবে না বলেই আশা তৃণমূল জেলা নেতৃত্বের।