বসিরহাট: বসিরহাট মহকুমার মিনাখাঁ ব্লকের ধুতুরদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের গোয়ালদহ গ্রামের বছর ৩২-এর নাসিরউদ্দিন মোল্লা দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছিলেন। শনিবার রাতে তাঁকে মিনাখাঁ গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করলে তাঁর মৃত্যু হয়। এই নিয়ে গত এক বছরে গোয়ালদহ গ্রামে পাঁচজন যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ ও ‘০৯ সালে বামফ্রন্টের আমলে এখানকার শ্রমিকরা আসানসোল, রানিগঞ্জের একাধিক পাথর খাদানে কাজ করতে যেতেন। দীর্ঘদিন পাথর ভাঙার পেশায় কাজ করার কারণে পাথরের গুঁড়ো নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরের মধ্যে বাসা বাঁধতে শুরু করে। ধীরে ধীরে তা শ্বাসনালীতে জমাট বেঁধে মারণ রোগ সিলিকোসিসে আক্রান্ত হন মানুষ। সিলিকোসিস এমন এক অসুখ যা এককথায় দুরারোগ্য বলা যায়। এখনও পর্যন্ত গলদা ও এই গ্রামে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫, ইতিমধ্যে সরকারিভাবে তাঁদের পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন ও ওষুধ দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে। কিন্তু, দীর্ঘদিন মারণ রোগের বাসা বেঁধেছিল শরীরে। যত সময় যাচ্ছে, ধীরে ধীরে অবস্থার অবনতি হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন তাঁরা।
গত এক বছরে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত নাসিরউদ্দিন মোল্লার দাদা আলাউদ্দিন মোল্লা এক বছর আগে এই রোগেই আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ইতিমধ্যে এই রোগে আক্রান্ত এবং মৃতদের পরিবার চার লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ পেয়েছে।
আরও পড়ুন: Satpal Rai: সতপালের কফিনবন্দি দেহ ফিরছে জন্মভিটেয়
প্রসঙ্গত, এলাকাটিতে খুবই দুঃস্থ ও পিছিয়ে পড়া মানুষের বসবাস। তাই সংসারের জোয়াল টানতে রুটিরুজির খোঁজে গ্রামের মানুষকে অন্যত্র কাজে যেতে হয়। প্রাণের তোয়াক্কা না করেই তাঁরা পাথর খাদানের কাজ বেছে নেন। আর দীর্ঘদিন ধরে খাদানে কাজ করার ফলে তাঁদের শরীরে বাসা বাঁধে এই মারণ অসুখ।