বালুরঘাট: প্রার্থীপদ নিয়ে দলের অন্দরের ঝামেলা (WB Civic Polls) মেটাতে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন জেলার একমাত্র মন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূল নেতা বিপ্লব মিত্র। যদিও মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র ক্ষোভ বিক্ষোভের বিষয় নিয়ে বৈঠকের কথা মানতে নারাজ। তিনি জানান, এই বৈঠক ছিল আগামীকাল ও পরশু দুদিনের মধ্যে প্রার্থীদের মনোনয়ন যাতে ষুষ্ঠুভাবে জমা দেওয়া সম্ভবপর হয়। তবে মন্ত্রী মুখে স্বীকার করে নেন, এসব পুরভোটে প্রার্থী পদ নিয়ে ক্ষোভ হয়ে থাকে, পরে সব মিটে যায়।
সোমবার দুপুরে বালুরঘাট শহরের কাঁঠালপাড়া এলাকায় দলের জেলা কার্যালয়ে আসেন বিপ্লব মিত্র। ছিলেন জেলার কোর কমিটির সদস্যরা। গত শুক্রবার দলের তরফে বালুরঘাট ও গঙ্গারামপুর পুরসভার প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়। আর এরপরেই বালুরঘাটের প্রার্থীদের নামের তালিকা নিয়ে ঘোর অশান্তি দেখা দেয়।
বালুরঘাট পুরসভার ২৫টি ওয়ার্ডের জন্য দু-একজন পুরনো কর্মীকে রেখে ঝেড়ে নতুন কর্মীদের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করায় কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। বিশেষ করে বিগত বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান রাজেন শীলকে দল এবার টিকিট না-দেওয়ায় দলের অন্দরে গুঞ্জন দেখা দেয়। রাজেন শীল মন্ত্রী বিপ্লববাবুর খুব কাছের লোক বলে পরিচিত। তা ছাড়া তিনি তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে প্রথমে কংগ্রেস পরে তৃণমূলের হয়ে টানা কয়েক বছর এই পুরসভার কাউন্সিলর ছিলেন। এবার তাঁর টিকিট না পাওয়া নিয়ে গুঞ্জন দেখা দেয়। তবে কি তিনি নির্দল হিসেবে দাঁড়াবেন এবারের পুরভোটে?
যদিও তিনি এব্যাপারে কোনও মন্তব্য না করে বলেছেন, তিনি তৃণমূলের একজন সৈনিক, যতদিন রাজনীতিতে থাকবেন মমতার দল করে যাবেন। দলের অন্দর মহল সূত্রের খবর, রাজেন শীলের বিষয় নিয়েই মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলতে এসেছেন। এব্যাপারে কোনও নেতাই মুখ খুলতে নারাজ।
অপরদিকে বালুরঘাটের বেশ কিছু ওয়ার্ডে প্রার্থী পদ নিয়ে দলের কর্মীদের ক্ষোভ বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে। প্রার্থী বদলের দাবি নিয়ে খোদ জেলা সভাপতির বাড়িতে গিয়ে ধরনা হয়েছে। ২২ নম্বর ওয়ার্ডে দলের প্রার্থীকে বহিরাগত বলে প্রার্থী বদলের দাবি জানিয়ে টায়ারে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন হয়েছেন। তাঁদের বিক্ষোভ থামাতে গিয়ে কর্মীদের হাতেই লাঞ্ছিত হয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। ১ নম্বর ওয়ার্ডে যাঁকে দল প্রার্থী করেছে, দলের অন্দরে গুঞ্জন, তিনি নাকি প্রার্থী পদে দাঁড়াতে না চেয়ে নেতৃত্বকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন।
এসব কর্মীদের ক্ষোভ মিটিয়ে দলকে ভোটের ময়দানে পুরো শক্তি দিয়ে নামানোর জন্যই এই বৈঠক বলে জানা গিয়েছে।
যদিও বৈঠক শেষে মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র সাংবাদিকদের এসব প্রশ্ন সযত্নে এড়িয়ে গিয়ে বলেন, দলের সব কর্মীই চান প্রার্থী হতে, এতে দোষের কিছু নেই। তবে পরে তাঁরা আবার দলকে জেতাতে মাঠে নামেন। এ নতুন কিছু নয়। তবে নামের তালিকার মধ্যে দুএকটি নিয়ে কথা উঠেছে। বিষয়টি উপর মহলে জানানো হয়েছে। যেমন নির্দেশ আসবে, আমরা সেভাবে কাজ করব।