বেলদা: চলতি মাসেই পালিত হচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিসের পথ নিরাপত্তা বা রোড সেফটি বিষয়ক সচেতনতামূলক কর্মসূচি (Safe Drive Save Life)। আর, তার মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন এক পুলিস কর্মী। পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা থানার অন্তর্গত ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর কুলিগেড়িয়া বাইপাসের কাছে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
জানা গিয়েছে, দাঁতনের দিক থেকে বেলদার দিকে ফিরছিলেন বেলদা থানায় কর্মরত গৌতম সিট নামে ওই পুলিসকর্মী। দ্রুতগতির একটি গাড়ি পিছন থেকে ওই পুলিসকর্মীর বাইকে সজোরে ধাক্কা মারে। রাস্তা থেকে প্রায় ২০-২৫ ফুট দূরে ছিটকে পড়েন তিনি। হেলমেট থাকলেও শেষরক্ষা হয়নি! ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বছর ৩২-এর গৌতমের। বেলদা থানার পুলিস মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। ঘাতক গাড়িটির খোঁজ চালাচ্ছে।
জানা গিয়েছে, বেলদা থানার এসডিপিও রিজার্ভ ফোর্সে কর্মরত ছিলেন ওই এনভিএফ কর্মী। সদ্য দাঁতন থানা থেকে স্থানান্তরিত হয়ে এসেছিলেন। মৃত গৌতমের বাড়ি ঝাড়গ্রাম জেলার তপসিয়া গ্রামে। সদ্য তিনি কন্যাসন্তানের পিতা হয়েছিলেন! পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত ৮টা নাগাদ ফোনে স্ত্রী’র সঙ্গে কথা হয় গৌতমের। স্ত্রীকে জানান, থানায় পৌঁছে গেছি। যদিও তখন বাইকেই ছিলেন গৌতম! কারণ, কথা বলার আধঘণ্টার মধ্যেই দুর্ঘটনা হয় বলে জানা গিয়েছে। তাঁর বাইকে বাঁধা ছিল চালের ব্যাগ ও কাঠের পিঁড়ি।
এদিকে, এই ঘটনায় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন এলাকাবাসী। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এক মাস ধরে জাতীয় সড়কের ওই জায়গাতে সংস্কারের কাজ চলছে। ফলে, একদিক বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু, কোনও স্পিড ব্রেকার না রেখেই সিঙ্গল ওয়েকে ‘ডাবল ওয়ে’ করা হয়েছে! এর ফলে, কুলিগেড়িয়া বাইপাস এমনিতেই দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে গিয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি। অভিযোগ, একদিকে যখন পুলিসকর্মীরা পথ নিরাপত্তা পালন করছেন গুরুত্ব দিয়ে, ঠিক সেই সময়ই জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কর্তব্যে উদাসীনতার বলি হতে হল এক পুলিসকর্মীকেই! এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে বেলদা থানা ও এলাকা জুড়ে।