মালদহ: এ যেন গঙ্গা জলে গঙ্গা পুজো! হ্যাঁ, এমনটাই হচ্ছে পাকা রাস্তা তৈরির নামে। কাজ না-করেই মালদহ জেলার কালিয়াচক-৩ নম্বর ব্লকের সাহাবাজপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বরাদ্দের কয়েক লক্ষ টাকা গায়েব করার অভিযোগ উঠেছে। মূল অভিযোগ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে হলেও স্থানীয় গ্রামবাসীর বক্তব্য, গ্রাম পঞ্চায়েতের মদত ছাড়া এটা সম্ভব নয়। আর্থিক দুর্নীতির বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে, তড়িঘড়ি রাস্তা তৈরি করতে যায় ওই ঠিকাদার সংস্থা। কিন্তু গ্রামবাসীরা আর কাজ করতে দেননি।
সূত্রের খবর, এমজিএনআরইজিএস প্রকল্পে মালদহের কালিয়াচক-৩ নম্বর ব্লকের সাহাবাজপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ডোমাইচক গ্রামে শ্মশানের রাস্তা এবং শ্মশান সংস্কার-সহ একাধিক পুকুর খননের জন্য ৫০ লক্ষের বেশি টাকা মঞ্জুর করা হয়েছিল। কিন্তু দেখা যায় যে ঠিকাদার সংস্থা কাজের বরাত পেয়েছিল, সেই সংস্থা কাজ না-করে টাকা তুলে নিয়েছে। এই নিয়ে ডোমাইচকের গ্রামের মানুষ ২৪ নভেম্বর কালিয়াচক-৩ নম্বর ব্লকের বিডিও-র কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ করেন। এই অভিযোগের পরই ওই ঠিকাদার সংস্থা রাস্তা এবং শ্মশান সংস্কারের কাজ শুরু করে। কিন্তু ডোমাইচক গ্রামের মানুষ ওই ঠিকাদারের কাজ বন্ধ করে দেয়।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ঠিকাদার সংস্থা গঙ্গা জলে গঙ্গা পুজো করছে। রাতের অন্ধকারে জেসিপি দিয়ে আশপাশের মাটি কেটে রাস্তা তৈরি করছে। মাটি কেটে নেওয়ায় একবুক করে গর্ত তৈরি হয়েছে। যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, যাঁদের জমি থেকে মাটি কেটে রাস্তায় ফেলা হচ্ছে, তাঁরাও জানেন না। জমির মালিকের অনুমতি না নিয়ে, রাতের অন্ধকারে মাটি কাটা হচ্ছিল। তাঁদের অভিযোগ, ঠিকাদার এবং পঞ্চায়েত প্রধান মিলে এই বেআইনি কাজ করেছেন।
আরও পড়ুন-করোনা আক্রান্ত এক পড়ুয়া, ৭ দিন বন্ধ কলেজের কয়েকটি বিভাগ
কংগ্রেস এবং বিজেপি মিলে সাহাবাজপুর গ্রাম পঞ্চায়েত পরিচালনা করছে। শ্মশানের এক সাধুর আক্ষেপ, ‘শেষ পর্যন্ত শ্মশানের উন্নয়নের টাকা চুরি করে খাচ্ছে। দেখে অবাক হচ্ছি না। এটা কলিযুগ, এখন সব কিছুই সম্ভব। বিডিও-র সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে, উনি অভিযোগ পেয়েছেন বলে স্বীকার করেন। ঘটনার তদন্ত হবে বলেও আশ্বস্ত করেছেন। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি যদিও দাবি করেছেন, তিনি এখনও কোনও অভিযোগ পাননি। পেলে খতিয়ে দেখবেন।