টাকি: শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয়। ভারতবর্ষের পর্যটন মানচিত্রে অন্যতম কেন্দ্র হয়ে উঠেছে টাকি। বছরের যে কোনো সময় ঘুরতে যাওয়ার জন্য টাকি এক আদর্শ জায়গা। টাকিকে ঘিরে গড়ে উঠেছে পর্যটন শিল্প। ইছামতী নদীর পাড়ে অবস্থিত টাকিকে আরও বেশি করে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য এই জায়গাটিকে বিশেষ গুরুত্ব দেয় রাজ্য সরকার। কিন্তু লকডাউন ও তার পরে করোনার বিধি নিষেধের ধাক্কায় অনেকটাই বিপর্যস্ত ইছামতী পাড়ের টাকির পর্যটন শিল্প।
আরও পড়ুন : করোনায় ভাটা পড়েছে পর্যটন শিল্পে
বছরের বিভিন্ন সময়ে মানুষের বিনোদনের অন্যতম জায়গা হল টাকি। ইছামতী নদীর পাড় ঘেঁষে সারি সারি সরকারি বেসরকারি গেস্ট হাউস গড়ে উঠেছে। সেই গেস্ট হাউসের লাগোয়া পার্ক তৈরি করা হয়েছে। সেখান একটু এগিয়ে গেলেই পর্বে বাদাবন। এই বাদাবনের নতুন নাম দেওয়া হয়েছে মিনি সুন্দরবন। সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির ম্যানগ্রোভও দেখা যায়। যেগুলি গভীর সুন্দরবন জঙ্গলের ভেতরে পাওয়া যায়। তার পাশাপাশি টাকি ইছামতী নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে নদীর ওই কিনারে আছে বাংলাদেশ। ঠিক পিছন দিয়ে বয়ে গেছে ইছামতি নদী আর সেই সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যায় টাকিতে দাঁড়িয়ে। যেখানে সব সময় বিশেষ করে ছুটির মরশুমে শুধুমাত্র বসিরহাট কেন, রাজ্য তথা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা ছুটে আসেন তাঁদের অবসর যাপন ও সামান্য বিনোদনের জন্য। এখানে এসে তাঁরা নদীর দু পাড়ের সৌন্দর্য্য উপভোগের সঙ্গে সঙ্গে পায় প্রকৃতির মায়া জড়ানো আদর।
তবে কার্যত সরকারি বিধিনিষেধের জেরে টাকির বিভিন্ন উদ্যানগুলো আজ প্রায় শূন্য স্থানে পরিণত হয়েছে। তারাও যেন চাতক পাখির মতো চেয়ে রয়েছে। কবে আবার ভরে উঠবে উদ্যান, বাচ্চাদের ছুটোছুটি থেকে শুরু করে বড়দের নদীর ধারে বসে কিছু সময় কাটানো, চায়ের কাপে উঠবে তুফান, আড্ডায় মাতোয়ারা হয়ে উঠবে পর্যটকরা। শুধু তারই আশায় দিন গুনছে এই এলাকার ব্যবসায়ীরা। টাকির পর্যটন শিল্পের বিভিন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত কয়েক হাজার পরিবার। হোটেল মালিক, নৌকার মাঝি, ভ্যান ও টোটো চালক সহ একাধিক রেস্টুরেন্টের মালিক ও কর্মচারীরা। লকডাউন উঠে গেলে আবার তাঁরা স্বমহিমায় ব্যবসা করতে পারবেন এবং স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবেন। এই আশায় বুক বাঁধছে টাকি পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা।