বাসন্তী: মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেকে শেকল দিয়ে বেঁধে রেখেছে পরিবার। সেখানেই দীর্ঘদিন ধরে পড়ে রয়েছেন বছর ২৮ এর রবিরাম। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী থানার আমঝাড়া গ্রামের ঘটনা। সেখানকার সুভাষ নাইয়ার রয়েছে দুই ছেলে। ছোট ছেলে রবিরাম নাইয়া।
দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীনতার জন্য তাঁকে শেকল দিয়ে বেঁধে রেখেছে পরিবার। সেই রবিরামকে সুস্থ করে তুলতেই সরকারি সাহায্যের আর্জি জানাল পরিবারটি।
ঘটনার সূত্রপাত প্রায় ১২ বছর আগে থেকে। ২০০৯ সালে সুন্দরবনের উপর দিয়ে আয়লা। যার ফলে সেই সময় পরিবারের সদস্যেরা অসহায় হয়ে পড়েছিল। কাজের সন্ধানে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছিল সুভাষ নাইয়ার পরিবার। সেখানে কয়েক মাস কাজ করার পরে একরকম মানসিক সমস্যা দেখা দেয় সুভায নাইয়ার ছোট ছেলে রবিরামের।
তারপর রবিরামকে বাড়িতে নিয়ে আসে পরিবার। তারপর থেকে দীর্ঘ ১২ বছর ধরেই সে বাড়িতে। বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করিয়ে তাঁকে সুস্থ করে তোলা যায়নি। গত বছর করোনা পরিস্থিতির জেরে থমকে যায় রবিরামের চিকিৎসা। সেই সঙ্গে লকডাউনে আর্থিক পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যায় নাইয়া পরিবারের। সেই কারণেই তাঁর ওষুধপত্র সময় মতো খাওয়ানো হচ্ছিল না এমনই দাবি পরিবারের ৷ এমনকি চিকিৎসা করাতে নিয়ে যেতে পারছিল না কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালেও।
আরও পড়ুন: বাইক থেকে রাস্তায় পড়ে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট মহিলা
তার পর থেকে মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারণে বাড়িতে অত্যাচার শুরু করে রবিরাম। এমনকি পরিবারের লোকজনদের মারধর করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়ে গ্রামে বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে উৎপাত শুরু করে সে। সেই কারণে গোয়াল ঘরের সঙ্গে থাকা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে একটি ঘরে তাঁর পায়ে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখে পরিবার । সেখানেই তাঁর চলে স্নান খাওয়া-দাওয়া এমনকি ঘুমানো। নিজের হাতে খেতে পারলেও মাঝে মাঝে তার মা তাঁকে খাইয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: প্রেমিকের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় বৌমা, কুপিয়ে খুন শ্বশুরের
এক মাত্র বড় ছেলের উপর নির্ভর করে সংসার চলে তাঁদের। চিকিৎসা করাতে পারছে না পরিবারের সদস্যের অনাহারে দিন কাটছে নাইয়া পরিবারের। গ্রামের লোকজন কিছুটা সহযোগিতা করলেও তাতে তাঁদের নুন আনতে পান্তা ফুরায়। পরিবারের দাবি সরকারের পক্ষ থেকে যদি কিছু সহযোগিতা করা হয় তাহলে অন্তত তাঁদের সন্তানকে সুস্থ করে তুলতে পারবেন তাঁরা।