বারাকপুর: মঙ্গলবার ঘরের মধ্যে জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ৩ জনের। এই ঘটনায় মঙ্গলবারই ওই পরিবারের খুদে সদস্য আবির দাসকে তার ঠাকুমার কাছে পাঠিয়েছে পুলিশ। গোটা ঘটনার তদন্তও শুরু হয়েছে। আতঙ্কে আবাসনের বাসিন্দারা এলাকা ছাড়ছেন। ইতিমধ্যে, একশো জনের বেশি চলে গেছেন।
বুধবার পুলিশ জানিয়েছে, ঘরে টেবিল ফ্যানে বিদ্যুৎ সংযোগ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় এগারো বছরের শুভ দাস। তাকে বাঁচাতে বাবা রাজু দাস ছুটে আসেন (৩৯)। তিনিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। এরপরই ছুটে আসেন মা পৌলোমী দাস(৩৫)। কিন্তু কিছুই হল না। তিনিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। পরপর তিনজন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এই গোটা ঘটনার সময় আর কেউ ছিলেন। ছোট্ট আবির তখন পাশের বাড়িতে খেলছিল। দাবি, পুলিশের। তাঁরা আরও জানিয়েছেন, ঘটনার বেশ কিছুক্ষণ পর আবির বাড়িতে আসে। মা মা বলে বেশ কয়েকবার ডেকে উত্তর পায়নি সে। পরে ঘরে ঢুকতেই চিৎকার শুরু করে। কারণ, মা-বাবা-দাদা ঘরের জমা জলে ভাসছে। তাদের হাত- পা ধরে বেশ কয়েকবার ডাকার চেষ্টা করে সে। কিন্তু, যথারীতি উত্তর পায়নি। পরে ছুটে যায় প্রতিবেশী দাদুর কাছে। ” দাদু দাদু চলো না বাবা,মা- দাদারা জলের মধ্যে পড়ে আছে। কথা বলছে না। আবিরের কথা শুনে ছুটে যান প্রতিবেশী দাদু। মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন। বাইরে ছুটে এসে “কে কোথায় আছো? বাঁচাও বাঁচাও….” বলে লোকজন জোগাড় করেন। পরে আবিরের মা-বাবা-দাদাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করে তাদের।
আরও পড়ুন- ক্রিপ্টো কারেন্সির অ্যাপেই ফাঁদ, কয়েক কোটি খুইয়ে বিধাননগর পুলিশের দ্বারস্থ বিদেশি নাগরিক
মৃত শুভ দাস(১১), রাজু দাস(৩৯) পৌলমী দাসের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। ছোট্ট আবিরএখন রুইয়া ভাঙনপাড়ায় ঠাকুমার কাছে আছে। আতঙ্কে আবাসনের বাসিন্দারা ওই পাড়ায় অস্থায়ী শিবিরের আশ্রয় নিচ্ছেন। তবে, বেশ কয়েকটি পরিবার এখনও আবাসনে আছে। স্থানীয় প্রশাসনকে জল সরানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু, আগামীতে ই ঘটনার যে পুনরাবৃত্তি হবে না তা নিশ্চিত করে বলতে পারছে না কেউ!