দুর্গাপুর: মেমারির ইউটিউব চ্যানেলের মালিক, কখনও হিউম্যান রাইটস কমিশনের প্রতিনিধি কিংবা এনএইচ-র কর্মী পরিচয়ে দেবেশ ঘুরে বেড়াত। ২০২০ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে দুর্গাপুরের দ্বিতীয় টোটো চালক ইন্দ্রানী মুখার্জীর সঙ্গে পূর্ব বর্ধমানের মেমারির বাসিন্দা দেবেশ বৈদ্যর পরিচয় হয়। দুর্গাপুর ইস্পাত নগরীর রাজেন্দ্র প্রসাদের বাসিন্দা ইন্দ্রানীর জীবনে এই পরিচয় কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল৷
আরও পড়ুন- পায়ে এখনও ফোলা ভাব আছে, এসএসকেএমে এসে বললেন মমতা
কারণ, দেবেশ ইন্দ্রানীর আর্থিক দুর্বলতার সুযোগে মেমারির একটি ইউটিউব চ্যানেলও নিউজের স্ক্রিপ্ট রাইটার, ভয়েস দেওয়ার কাজ দেন দেবেশ৷ সেই কাজ ঘরে বসেই মোবাইকে সারত ইন্দ্রানী। তারপর শুরু হয় দেবেশ বৈদ্যর মানসিক নির্যাতন৷ অভিযোগ, ইন্দ্রানীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় দেবেশ৷ ইন্দ্রানী রাজি না হওয়ায় বাধে বিপত্তি৷ বিয়েতে রাজি হতে প্রতিনিয়ত চাপ দেওয়া হতো৷ হোয়াটস্যাপ, ফোন কল করে ঘরে পুলিশ পাঠানো তো কখনও ফোনের সিম ব্লকের হুমকি দিত দেবেশ৷ বাধ্য পুলিশের দ্বারস্থ হয় ইন্দ্রানী৷
আরও পড়ুন- নিজে ফিরলেও আফগানিস্তানে আটকে ২০০ সহকর্মী, উদ্বেগে কলকাতার যুবক
কিন্তু পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব না দেওয়াতে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কমিশনারের কাছে যান ইন্দ্রানী মুখার্জী। পড়শী-আত্মীয়রা এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে তাঁদের মেমারির দেবেশ বৈদ্যকে ফোনের যাবতীয় তথ্য হ্যাক করত৷ অভিযোগের তালিকা আরও বড়৷ মেমারির ওই ইউটিউব চ্যানেলে চাকরি দেওয়ার নাম করে কয়েক হাজার টাকাও নিয়েছিল দেবেশ৷ ফলে, ইন্দ্রানীর মানসিক নির্যাতন বাড়তে থাকায় আত্মহত্যার কথা ভেবে ছিলেন৷
আরও পড়ুন- ঘাসফুলেই আস্থা, বিজেপি ছাড়লেন হাওড়ার একাধিক পঞ্চায়েত সদস্য
এরকম পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সকালে দুর্গাপুরে রাজেন্দ্র প্রসাদে ইন্দ্রানী মুখার্জীর বাড়িতে আসেন দেবেশ। সাদা রঙের স্করপিও গাড়িতে চেপে। সঙ্গে সঙ্গে পাড়া পড়শিরা তাকে হাতে নাতে ধরে ফেলে৷ চলে গণপ্রহার৷ খবর পেয়ে, পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে৷ পুলিশকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয়রা৷ দেবেশের শাস্তির দাবি করেন তারা৷ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত দেবেশ বৈদ্য। পুলিশ দেবেশকে আটকের পাশাপাশি গোটা ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে৷