নয়াদিল্লি: পেট্রোল-ডিজেলের শুল্ক কমানোয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানালেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী৷ বুধবার রাতে টুইট করে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি যশবন্ত সিনহা কটাক্ষের সূরে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন৷ পেট্রোল, ডিজেলের মাধ্যমে সাধারণের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগও তুলেছেন তিনি৷
গভীর ক্ষতে মলম লাগানোর মতো বুধবার কেন্দ্রীয় সরকার পেট্রোল এবং ডিজেলের আবগারি শুল্ক কমিয়েছে৷ আগামিকাল বৃহস্পতিবার থেকে পেট্রোল-ডিজেলে নতুন নিয়ম কার্যকর হতে চলেছে৷ দীপাবলির ঠিক আগে ‘উপহার’ হিসেবে লিটারপিছু পেট্রোল এবং ডিজেলের আবগারি শুল্ক কমানো হয়েছে। লিটার প্রতি পেট্রোলে পাঁচ টাকা আবগারি শুল্ক কমানো হল। আর ডিজেলের ক্ষেত্রে লিটার প্রতি ১০ টাকা ছাড় ঘোষণা করা হয়েছে। যা নিয়েই যশবন্ত সিনহা কেন্দ্রকে আক্রমণ করেছেন৷
এ দিন তিনি টুইটে লিখেছেন, ‘ ধান্যবাদ মোদিজি। পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে জনগণের শত কোটি টাকা ছিনতাই করার পর আপনি তাদের কয়েক টাকার স্বস্তি দিয়েছেন’(লেখা অপরিবর্তিত)৷
Dhanyawad Modiji. After robbing the people of hundreds of crores thru' petrol and diesel price hikes you have given them relief of a few rupees.
— Yashwant Sinha (@YashwantSinha) November 3, 2021
পেট্রোল ও ডিজেলের দামের উপরে এক্সাইজ ডিউটি ও অন্যান্য চার্জ যুক্ত করার পর দাম আরও মহার্ঘ হয়। ফলে এই শুল্ক কমলে জ্বালানির দাম অনেকটাই কমতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ৪ নভেম্বর থেকে নয়া দাম লাগু হবে। তার আগেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কেউ কেউ দিপাবলীর উপহার ধরলেও বিরোধীরা কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না। লাগাতার দাম বাড়িয়ে সেঞ্চুরি পার করে পাঁচ টাকা কমানো হাস্যকর বলে বিরোধীদের দাবি৷
আভাস আগেই পাওয়া যাচ্ছিল৷ কারণ, জ্বালানির দরে জিএসটি বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। সেই সুবাদে তেলের ছ্যাঁকা থেকে কিছুটা হলেও রেহাই মিলতে পারে আমজনতার। তবে, রাজনৈতিক মহলের মতে, উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড-সহ পাঁচটি রাজ্য নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে। সেই ভোট বৈতরণী পার করতেই তেলের দাম কমাতে উঠে পড়ে লেগেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। বাংলা,বিহার সহ বেশ কয়েকটির রাজ্যের উপ নির্বাচনে ধাক্কা খাওয়াটাকেো অনেকে শুক্ল কমানোর কারণ বলে মনে করছেন৷
গত কয়েক বছরে দফায় দফায় বেড়েছে পেট্রোল-ডিজেলের দাম। দোসর রান্নার গ্যাস। এই নিয়ে বিরোধী দলগুলো কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে কাঠগড়ায় তুললেও উপযুক্ত পদক্ষেপ তো দূরের কথা উল্টে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দর ও জ্বালানির ক্ষেত্রে পূর্বসূরী কংগ্রেস সরকারের ফেলে যাওয়া বিশাল ঋণের দোহাই দিয়ে এসেছে বিজেপি। এরই মধ্যে গত জুনে এক জনস্বার্থ মামলার ভিত্তিতে জ্বালানিকে জিএসটি-র আওতায় আনার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলকে ভেবে দেখতে বলেছিল কেরল হাই কোর্ট। কিন্তু, তারপরেও কেন্দ্রের হস্তক্ষেপের বদলে দাম বাড়তে বাড়তে অধিকাংশ রাজ্য লিটার পিছু ১০০ টাকা পেরিয়েছে পেট্রোল-ডিজেলের দর। এবার বিজেপি শাসিত উত্তর প্রদেশের দরজায় কড়া নাড়তে নড়েচড়ে বসেছে নরেন্দ্র মোদি সরকার।
আরও পড়ুন: ১১ বছর ধরে প্রধান শিক্ষক ছাড়াই চলছে স্কুল, রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের
অর্থনীতিবিদদের একাংশের মতে, মূল্য কর, সেস, বাড়তি ভ্যাট বা সারচার্জ ও এক্সাইজ ডিউটি ছাড়াও জ্বালানি চাহিদা অপরিশোধিত তেলের দাম পরিবহন খরচ ও ডিলারের কমিশনের নিরিখে দাম নির্ধারণ করে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক। সেই সূচকের ভিত্তিতে একেক রাজ্যে একেক দামে বিক্রয় হয় পেট্রোল, ডিজেল।
আরও পড়ুন: বিহারে স্কুল পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে ক্রেডিট ৯০০ কোটি টাকা, শুরু তদন্ত