গোসাবাঃ কোভিড কেড়ে নিল আরেক তৃণমূল বিধায়ককে। জানা গেছে গোসাবার বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর কিছুদিন আগে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে ১৪ মে থেকে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
গত ১১ মে করোনায় আক্রান্ত হয়ে কলকাতার এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন গোসাবার তৃণমূল বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর। সেখানে দিন কয়েক চিকিৎসার পর কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি হন তিনি। সেখানেই গত মাসখানেক ধরেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরিবার সূত্রের খবর, করোনার সংক্রমণ থেকে মুক্তি মিললেও গত কয়েকদিন ধরে যথেষ্ট অসুস্থ ছিলেন। শুক্রবার ফুসফুসে সংক্রমণের কারণে একটি অস্ত্রোপ্রচারও হয়। তারপর থেকেই ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েন। শনিবার সকাল থেকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। ভেন্টিলেশনে রাখা হয় তাঁকে। অবশেষে শনিবার রাত পৌনে ন’টা নাগাদ মৃত্যু হয় এই পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদের।
দীর্ঘ বামফ্রন্ট আমলেও বাসন্তীর চুনাখালি গ্রামপঞ্চায়েতকে নিজের দখলে রেখেছিলেন তৎকালীন কংগ্রেস নেতা জয়ন্ত নস্কর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরেই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন শুরুর দিন থেকেই। ২০০৬ সালে তৃণমূলের টিকিটে গোসাবা বিধানসভায় লড়াই করলেও জিততে পারেননি। তবে ২০১১ সালে রাজ্যে পরিবর্তনের হাওয়াতে এই কেন্দ্রে বাম প্রার্থীকে হারিয়ে প্রায় পাঁচ হাজার ভোটে যেতেন জয়ন্ত বাবু। ২০১৬ সালেও এই আসন ধরে রাখে তৃণমূল। জয়ে ভোটের ব্যবধান দ্বিগুণ হয়। এবারও তৃতীয় বারের জন্য বিধায়ক নির্বাচিত হন তিনি। ২৩ হাজারের বেশি ভোটে জয়লাভ করেন তিনি। তাঁর মৃত্যু রাজ্য তৃণমূলের কাছে অপূরণীয় ক্ষতি বলে মনে করছে দল। ইতিমধ্যেই তৃণমূলের অনেক রাজ্য নেতৃত্ব তাঁর মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী তাঁর শোকবার্তায় লেখেন, ‘বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ জয়ন্ত নস্করের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি আজ রাতে কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তিনি ২০১১ সাল থেকে একাদিক্রমে তিনবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা কেন্দ্রের বিধায়ক নির্বাচিত হন। সুন্দরবন অঞ্চলের উন্নয়নে তাঁর বিশেষ অবদান রয়েছে। তাঁর মৃত্যুতে রাজনৈতিক জগতে শূন্যতার সৃষ্টি হল। আমি জয়ন্ত নস্করের পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’