মালবাজার: ভুয়ো IAS ,CBI অফিসারের পর এবার ভুয়ো ভূত। লাটাগুড়ি জঙ্গলের ভূতের অস্তিত্ব নেই এমনটাই মত সকল স্তরের মানুষের, সবটাই গুজব। গরুমারা ও লাটাগুরির জঙ্গলে ভূতের গুজব নিয়ে রীতিমতো বিরক্ত পর্যটন ব্যাবসায়ী থেকে শুরু করে পর্যটকরাও। লাটাগুড়ি জঙ্গলের ভূতের গল্প ও ভূতের গুজব আজকের নয়। এই গুজবের সঙ্গে কাকতালীয়ভাবে মিলে যায় গত দুদিন আগে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা। যেখানে জলপাইগুড়ির একটি পরিবারের গাড়ির সামনে চলে আসে সাদা শাড়ি পরা খোলা চুলের এক মহিলা। আর সেই নিয়ে রীতিমত হুলুস্থুল কান্ড। ওই মহিলাকে তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে। পরে জানা যায় ওই মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন।
যদিও ততক্ষনে সামাজিক গণমাধ্যমে ভুতের গল্প ভাইরাল। ‘জ্যান্ত ভূতের দর্শন মিলেছে’ এই গুজবেই তোলপাড় এখন ডুয়ার্সের লাটাগুড়ি এলাকা। ভূত নিয়ে একাধিক গল্প শোনা গেলেও এই ভূতের দর্শন আজ পর্যন্ত কার কার হয়েছে সেই ব্যক্তিদের কিন্তু কোনো খোঁজ মেলেনি। বিগত কয়েক বছরে লাটাগুড়ি জঙ্গলের রাস্তায় চুরি ছিনতাইয়ের ঘটনাও সামনে আসেনি। তাই ভূতকে ঢাল করে চুরি ছিনতাই করার মতো উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে মনে করেছেন না স্থানীয় বাসিন্দারা। পর্যটকদের জন্য অন্যতম নিরাপদ গন্তব্য ডুয়ার্সের এই এলাকা। তবে, সাম্প্রতিক কালে ঘটে যাওয়া এইসব ঘটনার জেরে নাম খারাপ হচ্ছে ডুয়ার্সের এমনটাই মত স্থানীয় বাসিন্দাদের।
স্থানীয় বাসিন্দা মাজিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘সেই কবে থেকে শুনে আসছি লাটাগুড়িতে ভূত রয়েছে, ছেলেবেলা থেকে বেড়ে ওঠা আমার এই এলাকায়। আজ পর্যন্ত এই ভুতের দেখ আমরা পাইনি। তবে, এই রাস্তা নিয়ে মানুষের মুখে মুখে একাধিক গল্প গুজব রয়েছে। আর এই গুজবের বলি হতে হয়েছে সেই মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাকে। জঙ্গলের রাস্তায় বন্য জন্তু জানোয়ার নিয়ে একটা ভয় আছে। তবে, ভূত বা ছিনতাইবাজদের এই এলাকায় কোনো অস্তিত্ব নেই।”
সাম্প্রতিককালে ঘটে যাওয়া এই জ্যান্ত ভূতের ঘটনা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক বিষয় উঠে এসেছে। অনেকে তো সেই মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাকে গুজবের শিকার বলে মনে করছেন। এই ভাবে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাকেও হেনস্তা করা নিয়েও সোচ্চার হয়েছেন অনেকে। তবে কি কুসংস্কার, গুজব ও মানুষের সচেতনতার অভাবেই সেই নিরীহ মহিলাটিকে হেনস্থার শিকার হতে হল এই নিয়েও কিন্তু ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত মানুষেরা এই সমস্ত গুজবের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রচার চালাবেন। পাশাপাশি পর্যটকদের যেকোনো সমস্যায় তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সব ভীতিকে দূরে সরিয়ে ডুয়ার্সের এই প্রাকৃতিক মনোরম দৃশ্যকে উপভোগ করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।