কলকাতা: নারদ মামলায় মুখ্যমন্ত্রীকে হলফনামা জমা দেওয়ার অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ জানিয়েছে, ৫ হাজার টাকা জরিমানার বিনিময়ে হলফনামা দিতে পারবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আইনমন্ত্রী ও রাজ্য সরকারকেও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। তবে তারাও হলফনামা দিতে পারবেন। জরিমানার অর্থ লিগাল এইডের কাছে জমা দিতে হবে। সিবিআইও চাইলে হলফনামা জমা দিতে পারবে বলেই জানিয়েছে হাইকোর্ট। এ জন্য সিবিআইকে ১০ দিন সময় দিয়েছে আদালত। মামলার পরবর্তী শুনানি ১৫ জুলাই।
আরও পড়ুন: নারদ মামলা: মমতার আবেদনকে মান্যতা সুপ্রিম কোর্টের
হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে নারদা মামলার শুনানি চলছে। গত ৯ জুন হাইকোর্টে মুখ্যমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর হলফনামা জমা দিতে চায় রাজ্য। কিন্তু হাইকোর্ট সেই হলফনামা জমা নেয়নি। হলফনামা জমা নেওয়ার কারণ হিসেবে হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল এবং বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় যুক্তি দিয়েছিলেন, এক পক্ষের সওয়াল শেষে নতুন করে হলফনামা নিলে মামলা দীর্ঘায়িত হবে। এরপরই মমতার আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদীর আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত।
২৫ জুন হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মমতা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। তার জবাবে সুপ্রিমকোর্ট নির্দেশ দেয়, আমরা কলকাতা হাইকোর্টকে প্রথমে আবেদনকারীদের আবেদনের সিদ্ধান্ত নিতে অনুরোধ করছি। যেহেতু ৯ জুনের আদেশে হলফনামা না নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল, তাই ওই আদেশটি স্থগিত থাকবে। নতুনভাবে আবেদন করতে হবে। আবেদনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে হাইকোর্ট মামলাটি এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং পরবর্তী পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেবে। এরপর মঙ্গলবার হলফনামা জমা দেওয়া সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয় কলকাতা হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে।
আরও পড়ুন: ‘সাত বছর নারদে অভিযুক্তদের গ্রেফতারির কথা মাথায় এল না’?
মঙ্গলবারের শুনানিতে বৃহত্তর বেঞ্চের দুই বিচারপতির প্রশ্নের মুখে পড়েন সিবিআইয়ের কৌঁসুলি দেশের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা৷ মেহেতাকে এদিন বিচারপতি হরিশ ট্যাণ্ডন প্রশ্ন করেন, “ওই দিনের (১৭ মে’র) ঘটনা সম্পর্কে যে তথ্য রাজ্যের কাছে আছে তা যদি আদালতের কাছে হলফনামা আকারে পেশ করতে চায়, সেক্ষেত্রে সিবিআইয়ের আপত্তি কোথায়” ? এর ঠিক পরই বিচারপতি সৌমেন সেন প্রশ্ন করেন, “শুধুমাত্র সিবিআই অভিযোগ করেছে বলেই মানুষের জমায়েতের তত্ত্ব মেনে নিতে পারে না আদালত।”
এদিকে নারদ মামলায় আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, রাজ্যের পক্ষ থেকে একটি ৩৪ পাতার রিপোর্ট জমা হল কলকাতা হাইকোর্টে। ১৭ মে গিরিশ পার্ক, নিজাম প্যালেস সহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ হয়েছিল। সে দিনের ভিডিও ফুটেজ এবং সেখানে কোন কোন উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন, সেই বিষয়টিও উল্লেখ রয়েছে রিপোর্টে। ওই রিপোর্টে নিজাম প্যালেস থেকে সিবিআইয়ের অফিসাররা যখন চার্জশিট নিয়ে বের হচ্ছিলেন, সেই ভিডিও ফুটেজেরও উল্লেখ রয়েছে।