হাওড়া: শুভেন্দু অধিকারীর প্রতি ক্ষোভ উগরে তৃণমূলে যোগ দিলেন হাওড়া বিজেপির বহিষ্কৃত জেলা সভাপতি সুরজিৎ সাহা৷ তাঁর হাতে তৃণমূলের দলীয় পতাকা তুলে দেন রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়৷ বৃহস্পতিবার হাওড়া শরৎ সদনে তৃণমূলের কর্মী সম্মেলনে সুরজিৎ সাহার সঙ্গে প্রায় এক হাজার বিজেপি কর্মী-সমর্থক তৃণমূলে যোগ দেন। সকলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নে শামিল হতেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে দাবি করেন। সুরজিৎ সাহা বলেন, ‘দু’বছরের নেতার (শুভেন্দু অধিকারী) কথায় ২৮ বছরের কার্যকর্তাকে বহিষ্কার করেছে বিজেপি। এক মাস কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ছিলাম না৷ যে দলে সম্মান থাকে না সে দলে থাকার কোনও মানে হয় না৷’
বিজেপি থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর কোনদিন বিজেপি ত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছিলেন সুরজিৎ৷ বৃহস্পতিবার তৃণমূলে যোগদানের পর সে বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা৷ সুরজিৎ বলেন, ‘রাজনীতিতে চিরশত্রু বা চিরমিত্র বলে কিছু হয় না৷ ২৮ বছর বিজেপি করেছি৷ অথচ, দু’বছরের নেতার কথায় আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে৷ সেই দল থেকে আমি বাইরে ছিলাম৷ স্বাধীন ছিলাম৷ আমি সমাজ সেবার জন্য রাজ্যনীতিতে আসি৷ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনমুখী প্রকল্পে মানুষ উপকৃত হচ্ছেন৷ মমতার প্রতি অনুপ্রাণিত হয়েই তৃণমূলে যোগ দিয়েছি৷ সেই জনমুখী প্রকল্প নিচুস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতেই তৃণমূলে যোগ৷’
মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, কয়েকদিন আগে সুরজিৎ তৃণমূলে যোগ দেবেন বলে জানান৷ সঙ্গে সঙ্গে আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলি৷ তিনি অনুমতি দিতেই তৃণমূলে যোগদান করানো হল৷ আগামিদিনে হাওড়া জেলা তৃণমূলে দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করবে সুরজিৎ৷’
সুরজিৎ আরও দাবি করেন, তাঁর বিরুদ্ধে শুভেন্দু অধিকারী যা বলেছেন সেটা তিনি প্রমাণ করতে পারেননি। তিনি প্রমাণ করতে পারলে তাঁর কাছে তিনি ক্ষমা চেয়ে নেবেন। একইসঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন সত্যি যোগাযোগ থাকলে তিনি কেন এতদিন প্রমাণ করলেন না। এরপরেই বিস্ফোরক মন্তব্য করেন সুরজিৎ সাহা। তিনি বলেন, ‘ শুভেন্দুকে জেতাতে দলের নির্দেশে হাওড়া থেকে লোক পাঠানো হয়েছিল নন্দীগ্রামে।’ এরপর তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয় হাওড়া থেকে লোক না পাঠালে কী শুভেন্দু অধিকারী জিততে পারতেন না? তিনি বলেন, ‘তাহলে বাকি জায়গায় বিজেপি কেন ভালো ফলাফল করতে পারল না।’
আরও পড়ুন: শীতলকুচি ঘটনায় রিপোর্ট জমা দিল সিআইডি, অসহযোগিতার অভিযোগ CRPF-এর বিরুদ্ধে
শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে বিজেপির পুরনো কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের আগুন ছিল৷ সেই ক্ষোভের আগুনে আরও ঘি ঢেলে দিয়েছিলেন শুভেন্দু নিজে৷ ৯ নভেম্বর কলকাতা ও হাওড়া জেলাকে নিয়ে নির্বাচন কমিটি তৈরি করে বিজেপি৷ তখন বিধানসভা ভোটে হাওড়া জেলায় বিপর্যয়ের দায় বিজেপির কর্মীদের ঘাড়ে চাপান শুভেন্দু৷ তিনি বলেন, বিজেপি হাওড়ায় হেরেছে কারণ তৃণমূলের মন্ত্রী অরূপ রায়ের সঙ্গে দলের প্রার্থীদের যোগাযোগ ছিল। এরপরেই শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে মুখ খোলেন সুরজিৎ সাহা। এরপরেই বিজেপি তাঁকে বহিষ্কার করে।