পশ্চিম মেদিনীপুর: জলমগ্ন ঘাটাল। গত ১২ থেকে ১৩ দিন ধরে বিপর্যস্ত ঘাটালের জনজীবন। রবিবার জল কিছুটা কমলেও আবার ডিভিসির জল ছাড়ার কারণে বিপদে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। কোমর সমান জল। যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম নৌকা। সরকার থেকে নৌকা দেওয়া হয়েছে। এই নৌকা করেই বিনা পয়সায় যাতায়াত করছেন সাধারণ মানুষ।
আরও পড়ুন- ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান অনুমোদন করছে না কেন্দ্র: মমতা
জেলার বাকি জায়গায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও ঘাটালে চিত্র গত কয়েকদিন ধরে একই রকম প্রায়। প্রশাসনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বন্যায় জেলার প্রায় ৪ লক্ষ ৭ হাজার মানুষ । ৬৪ হাজার মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় সরাতে হয়েছে। ১৯ জনের মৃত্যুও হয়েছে। ইতিমধ্যেই যাদের দু’লক্ষ টাকা করে প্রাথমিক আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। ২২ হাজার বাড়ি ভেঙেছে জেলাজুড়ে যার মধ্যে ঘাটালেই রয়েছে প্রায় ১০ হাজার। ঘাটাল পৌর এলাকার ১৭ টি ওয়ার্ডের বারোটি এখনো জলমগ্ন। ঘাটাল ব্লকের বারটি পঞ্চায়েত জলে ডুবে রয়েছে।
আরও পড়ুন- কিছু অসুবিধা হলে আমাকে জানাবেন, ভুল বুঝবেন না, আদিবাসী দিবসে ঝাড়গ্রামে বললেন মমতা
সাধারণ মানুষের কথায়, ২০১৭র থেকেও ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে ঘাটালে। প্রায় ১ থেকে দেড় ফুট জল বেশি রয়েছে। তাঁরা জানেন না কতদিনে এই জল যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন। সাধারণ মানুষের জন্য ত্রাণ সামগ্রী ও অন্যান্য সহযোগিতা ইতিমধ্যেই করা হয়ছে। আরও জরুরি ভিত্তিক পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এখন তাঁদের একমাত্র ভরসা মুখ্যমন্ত্রী।
মঙ্গলবার হেলিকপ্টারে ঘুরে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী। স্থানীয় মানুষদের আরও সাহায্য করা ছাড়াও, মন্ত্রী-সাংসদদের এদিন সংসদ এবং বিধানসভায় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সরব হতেও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ঘাটালের পরিস্থিতি ভয়াবহ৷ বাড়ি, ঘর, দোকান সব জলের তলায়৷ ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প৷ মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে বারবার বলা হচ্ছে৷ কিন্তু কেন্দ্র কিছুতেই অনুমোদন দিচ্ছে না৷ এখন প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেশি হচ্ছে৷ পরিকল্পিত বন্যা হচ্ছে৷ তাই প্রশাসনকে পরিকল্পনা করে কাজ করতে হবে৷ আরও বেশি ক্যাম্প করতে হবে৷ এই এলাকার বিধায়করা সেচমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে দাবি করুন৷ নইলে ঘাটালকে বাঁচানো যাবে না৷’