বাঁকুড়া: ই- ওয়ালেট জালিয়াতি চক্রে ইতিমধ্যেই মূল পাণ্ডা অভিষেক সহ ৯ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় ৯ হাজার সিম। প্রত্যেকটা সিমই ভুয়ো পরিচয় পত্র দিয়ে অ্যাক্টিভ করা হয়েছে। যেগুলি নেওয়া হয়েছে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন মোবাইল সংস্থার রিটেলার ও ডিলারদের থেকে।
এই অ্যাক্টিভেটেড সিম কার্ড দিয়ে ই-ওয়ালেট বানিয়ে সেগুলি বিক্রি করা হত দেশের বড় বড় সাইবার প্রতারকদের কাছে। তাই ই- ওয়ালেট জালিয়াতি চক্র ছাড়াও সিম জালিয়াতিকেও বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। অভিষেকের সাথে সিম কার্ড কোন কোন রিটেলার ও ডিলারের যোগ ছিল তা জানার চেষ্টা করছেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই ভুয়ো নথি দিয়ে সিম কার্ড অ্যাক্টিভেটে করে দেওয়া সেই বিক্রেতাদের তালিকা তৈরি করছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।
আরও পড়ুন- চাকরি দেওয়ার নাম করে কয়েক লক্ষ টাকা প্রতারণা, গ্রেফতার ভুয়ো সাংবাদিক
মঙ্গলবার রাতে বাঁকুড়ার ওন্দা থানার সানতোড় থেকে একটি নেটওয়ার্ক সংস্থার ডিলারের কাছ থেকে ভুয়ো নথি, এবং ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী ও অ্যাক্টিভেটেড সিমকার্ড উদ্ধার করে পুলিশ। তদন্তকারী আধিকারিকদের দাবি, রাজারাম বিশ্বাস নামে ওই গ্রামের এক সিম কার্ডের ডিলার ভুয়ো নথির বিনিময়ে প্রচুর সংখ্যক অ্যাক্টিভেটেড সিম কার্ড পৌঁছে দিত অভিষেকের হাতে।
এই রাজারামের সঙ্গে সাইবার চক্রের মাস্টার মাইন্ড অভিষেকের যোগাযোগ কিভাবে হয়েছিল তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তদন্তকারী আধিকারিকদের দাবি, রাজারামের কাছে কোতুলুপুর ও জয়পুর থেকে ভুয়ো নথি আসত। পুলিশের দাবি, ভুয়ো আধার কার্ড ও ভুয়ো ভোটার কার্ড বানাতো কোতুলপুর ও জয়পুর থেকে ধৃত দুই যুবক। বিভিন্ন লোকের ছবি নেওয়া হত। তারপর ওই ব্যক্তির নামে ভুয়ো কার্ড বানিয়ে কাস্টমার ইনফরমেশন ফর্মে তা পূরণ করে পাঠিয়ে দেওয়া হত রাজারামের কাছে। ধৃতদের কাছ থেকেও প্রচুর সংখ্যক ভুয়ো আধার কার্ড এবং ভুয়ো ভোটার কার্ড উদ্ধার হয়েছে। রাজারাম সিম অ্যাক্টিভেশনের কাজ করত।
আরও পড়ুন- লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে জালিয়াতি রুখতে কড়া ব্যবস্থা মমতার
শুধু রাজারাম নয় এমন অনেক সিম কার্ড ডিলার ভুয়ো নথি দিয়ে সিম কার্ড এক্টিভেশন করে অভিষেক কে সরবরাহ করেছিল বলেই দাবি তদন্তকারী আধিকারিকদের। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে দ্বিতীয় দফায় প্রচুর সংখ্যক এক্টুভেশন সিম কার্ড, ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী এবং ভুয়ো কাস্টমার এপ্লিকেশন ফর্ম উদ্ধার করা হয়েছে। বাঁকুড়া জেলা পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতা পুলিশের দুই সদস্যের সাইবার এক্সপার্ট ধৃত ৯ জনকে আলাদা আলাদা ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। ইতিমধ্যেই ধৃতদের তিনটি মোবাইল ফরেন্সিক টেস্টর জন্য পাঠানো হয়েছে।