দু’বছর পর আবার শুরু হয়েছে রঞ্জি ট্রফি। বাংলা মরশুমের প্রথম ম্যাচে এক চিত্তাকর্ষক জয় দিয়ে শুরু করেছে। আজ দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামছে হায়দরাবাদের বিপক্ষে। এই হায়দরাবাদও প্রথম ম্যাচে বড় ব্যবধানে হারিয়েছে চণ্ডীগড়কে। বৃহস্পতিবার ম্যাচটি শুরু হচ্ছে কটকের বরবাটি স্টেডিয়ামে। এই মাঠ, উইকেট, পরিবেশ বাংলার বেশি চেনা। আগের ম্যাচ এখানে খেলে জিতেছে বাংলা। তাই মানসিক ভাবে এগিয়ে আছে বাংলা।
হায়দরাবাদ এই ম্যাচে পাচ্ছে না হনুমা বিহারীকে। তিনি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যে সিরিজ শুরু হচ্ছে, তাতে জাতীয় দলে আছেন। এই দলের লেফট আর্ম সি ভি মিলিন্দ চোটের জন্য খেলতে পারছেন না বাংলার বিপক্ষে। হায়দরাবাদ প্রথম ম্যাচ খেলতে নামছে বরবাটি স্টেডিয়ামের উইকেটে। তাই ম্যাচের আগে ‘হোম’ ম্যাচ খেলার অ্যাডভান্টেজ পাচ্ছে বাংলা।
আত্মবিশ্বাসী বাংলা শিবিরের অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরণ ম্যাচের আগে বলেছেন, আগের ম্যাচের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চান। ‘ আমরা আগের ম্যাচটি এই মাঠে এই উইকেটে খেলে জিতেছি। কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করে জিতেছি। উইকেট কেমন আচরণ করে জানি। পরিবেশ কখন – কেমন থাকে জানি। পিছিয়ে পড়ে লড়াই করে জেতাটা সবসময় তৃপ্তির। আর এইসব পরিস্থিতিতে দল একজোট হয়ে ওঠে। বাড়তি আত্মবিশ্বাস জন্মায়।’ ঠিকই বলছেন হয়তো বাংলার নেতা। বরোদার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৮৮ রানে সকলে আউট হয়ে যাওয়ার পর সেই ম্যাচ , ৩৪৯ রান তাড়া করে জেতা তো চিত্তাকর্ষক জয়।
Ranji Trophy 2022: Groups, Teams & Venue details. What is your favourite Ranji team? Who will win it this year?
Each group games are scheduled in a neutral venue for the respective teams. #RanjiTrophy #ranjitrophy2022 #BCCI #Ranji #CricketTwitter #Cricket #IPL2022 pic.twitter.com/wvKL7gSZOl
— Vtrakit Cricket (@Vtrakit) February 23, 2022
আশাকরা যায়, এই ম্যাচে শুরু থেকে বাংলার ব্যাটাররা দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ের নজির রাখবে। অভিমন্যু, সুদীপ, ঘরামী, অনুষ্টুপ, মনোজরা আরও ভালো পারফরমেন্স করে দেখবে।
যুব বিশ্বকাপ জয়ী দলের রিজার্ভে থাকা উইকেটকিপার – ব্যাটার অভিষেক পোড়েল প্রথম রঞ্জি ম্যাচ খেলতে নেমেই প্রমাণ করেছেন, তিনি বড় লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত। তিনি আর অলরাউন্ডার শাহবাজ আহমেদ ম্যাচ জেতানোর ব্যাটিং করে মূল্যবান পয়েন্ট তুলে নেয়।
বাংলার নেতা ঈশ্বরণ মনে করেন, এই মাঠের উইকেট পেস – সুইং বোলারদের সাহায্য করে। ঈশান পোড়েল , মুকেশ কুমার এবং আকাশদীপ – ছন্দে আছেন। বাংলার শিবিরে অপেক্ষায় দিন গুনছেন যুব বিশ্বকাপের জয়ী দলের নুতন বলের লেফট আর্ম জোরে বোলার রবি কুমার। দিল্লির হয়ে প্রথম ম্যাচ থেকে সুযোগ পেয়ে খেলা যুব দলের নেতা যশ ধুল খেলতে নেমে ম্যাচে জোড়া সেঞ্চুরি করেছেন। এগিয়ে গেছেন অনেকটাই। যুব দলের লেগ স্পিনার বিষ্ণই সিনিয়র জাতীয় দলের হয়ে খেলতে শুরু করে দিয়েছে। বাংলা শিবিরের রবিকে রাখা উচিত প্রথম একাদশে। বাকি তিন সিনিয়র পেসারদের ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলানো উচিৎ। বোলিং বৈচিত্র বাড়বে। সিনিয়র জাতীয় দলে লেফট আর্ম পেসার দরকার। রবিকে অরুণলাল কবে সুযোগ দেন – তাই দেখার।
হায়দরাবাদ দল অভিজ্ঞ আর উঠতি ক্রিকেটারদের সংমিশ্রণ। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে পোড় খাওয়া দলের নেতা তন্ময় আগরওয়াল, রবি তেজা, অক্ষত রেড্ডি আছেন। উঠতি ক্রিকেটার তিলক ভার্মা আছেন। আর ফাস্ট বোলার রক্ষণ্ণ রেড্ডি চণ্ডীগড় – এর বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচেই ৮ উইকেট নিয়েছিলেন। তিনিও আত্মবিশ্বাসী।
একাধিক অলরাউন্ডার আর লড়াকু ব্যাটার আছেন। হায়দরাবাদ দলের কোচ মিলাপ মেওয়াদা বলেছেন, ‘ ছেলেরা জানে মাঠে নেমে কি কি করতে হবে। আর এই ধরনের উইকেটে কেমন করে লড়াই করতে হবে। আমরা এবারের টুর্নামেন্ট ভালো ভাবেই শুরু করেছি। আমি আশাবাদী দলের সাফল্য নিয়ে।’
বাংলার কোচ অভিজ্ঞ অরুণলাল এই ম্যাচের আগে বলেছেনঃ ‘ আগের ম্যাচটা আমরাই নিজেরা কঠিন করে তুলেছিলেন। আবার আমরাই তা সামলে ম্যাচ জিতেছি। দলের চরিত্র প্রমাণ হয়ে গেছে। আমরা যে কোনও অবস্থা সামাল দিতে পারি। হায়দরাবাদ দলে অনেক অলরাউন্ডার। শেষ পর্যন্ত লড়ে যায়। আগের ম্যাচে জয় এখন অতীত। সামনে কঠিন লড়াই। প্রতিটি ঘণ্টা মন দিয়ে লড়তে হবে। প্রতিদিনকে সেরা দিন বানাতে হবে। নিজেদের লক্ষ্য স্থির রেখে এগিয়ে যেতে হবে।’
ছবি: সৌ সিএবি।