এই সিরিজ জয়ে বেশি খুশি হবেন হেড কোচ রাহুল দ্রাবিড়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে যে ভারতীয় দল খেলছে, সেই দলে এমন কিছু ক্রিকেটার আছে – যারা কোচ রাহুলের ‘ইন্ডিয়া এ টিম’র ক্রিকেটার। এমনকি দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথম একাদশে খেলেছেন, সেই দলেও ক্রিকেটার।
These two wins will have been most reassuring for Dravid because he is doing what he did with A team cricket; creating a strong base from players just outside the current first XI of whom no more than 3-4 were in this side
— Harsha Bhogle (@bhogleharsha) July 25, 2022
তিনশো রানের গণ্ডি টপকে দুই উইকেটে ম্যাচ জয়। আর সিরিজ জয় হল হেড কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের ভারতের। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচের নায়ক এক অলরাউন্ডার। ৩১১ তাড়া করে উত্তেজনা জিইয়ে রেখে জয় পায় ভারত। অক্ষরের শেষের মারে মিইয়ে গেল ক্যারিবীয়দের মারকাটারি লড়াই।
অক্ষর প্যাটেল দুরন্ত বল – ব্যাটের পারফরমেন্স ভারতকে সিরিজটি এক ম্যাচ বাকি থাকতে জেতাতে সাহায্য করল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩১১ তুলেও তাদের বোলিং – ফিল্ডিং দিয়ে রুখতে পারেনি।
টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যত এগিয়ে আসছে, ভারতীয় দলে নুতন নুতন ম্যাচ উইনারকে পাওয়া যাচ্ছে। কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের খুশি হওয়ার কথা অক্ষর প্যাটেলের দাপট দেখে। ম্যাচের শেষ পর্বে অপরাজিত ৬৪ রান করে ভারতকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে রুদ্ধশ্বাস জয় এনে দিলেন। সেই সঙ্গে ২-০ এগিয়ে গিয়ে সিরিজ জয় নিশ্চিত করে ফেলেছে টিম ইন্ডিয়া।
ত্রিনিদাদে ৩১২ রানের টার্গেট তাড়া করে ভারত জিতল ২ উইকেটে। রবিবারের ম্যাচ জিতে সিরিজ জয়ের বিচারে ভারত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টানা ১২টি দুই দলের লড়াইয়ের সিরিজ জিতল। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে এই নিয়ে টানা ৫টি সিরিজ জয় ভারতের ।
Most times successfully chasing 300+ targets under an Indian Captain in ODIs
7 – MS Dhoni
3 – Virat Kohli
3 – Sourav Ganguly
1 – Shikhar Dhawan*
1 – Rahul Dravid
1 – M Azharuddin
1 – Virender Sehwag
1 – Gautam Gambhir#WIvIND | #ShikharDhawan— Cric8addicted (@Armanmalik9582) July 26, 2022
৩১২ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ভারতের শেষ চার ওভারে দরকার ছিল ৩২ রান। ওভার পিছু ৮ রান করে প্রয়োজন ছিল। এমন একটা সময়ে রোমারিও শেফার্ডকে পরপর দুটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে অক্ষর মাত্র ২৭ বলে নিজের ৫০ রানের গণ্ডি পেরিয়ে যান। সেই ওভারে অভিষেক ম্যাচে আবেশ খানও একটা বাউন্ডারি হাঁকান। ৪৭ নম্বর ওভারে ভারত স্কোরবোর্ডে ১৩ রান হতেই ম্যাচের ভাগ্য অনেকটাই ঢলে পড়ে টিম ইন্ডিয়ার দিকে । ঠিক পরের ওভারেই আলজারি জোসেফ মাত্র ৪ রান দিলেও, শেষ রক্ষা করতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
শেষ দু-ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ১২ বলে ১৫ রান। সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয়ের লক্ষ্য ছিল শেষ ওভারে ১৫ রান। সেই ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ পারেনি। এই ম্যাচে, ভারত তা করে দেখায়।
৪৯ ওভারে জেদন স্মিথ ৭ রান দিয়ে আউট করে দেন আবেশ খানকে। শেষ ওভারে ভারতের ম্যাচ জিততে দরকার ছিল ৮ রান। সেই জয় রুখতে বল করতে এসেছিলেন কাইল মায়ের্স। প্ৰথম তিন বলে মাত্র ২ রান দেন। ভারতের ওপর চাপ চেপে বসে। কিন্তু “ওস্তাদের মার শেষ রাতে” যথার্থ করে চতুর্থ বলে ছক্কা মেরে ম্যাচের ভাগ্য নিজেদের দিকে টেনে নিয়ে নেন অক্ষর প্যাটেল।
ভারতীয় দলের দুই ওপেনার মধ্যে নেতা শিখর ছিলেন শুরু থেকে ছন্দহীন। শিখর ধাওয়ান ৩১ বলে ১৩ রান করে আউট হন। শুভমান গিলের সংগ্রহ ছিল ৪৩ রান। সূর্যকুমার যাদব আরও একবার ব্যর্থ। তাড়াতাড়ি তিনটে উইকেট পড়ে যাওয়ার পরে অস্বস্তিতে ছিল টিম ইন্ডিয়া। সেখান থেকে দলকে টেনে নিয়ে যান সঞ্জু স্যামসন এবং শ্রেয়স আইয়ার। তাঁদের চতুর্থ উইকেটের পার্টনারশিপ ছিল ৯৯ রানের । শ্রেয়স আইয়ার ৭১ বলে ৬৩ রান করে চমৎকার এক ইনিংস খেলে যান। ওয়ানডেতে প্ৰথম হাফসেঞ্চুরি করার পথে সঞ্জু স্যামসন তিনটে করে বাউন্ডারি, ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে যান। তিনিই ভারতকে ২০০ পার করিয়ে দেন।
https://twitter.com/AllNewsNow24x7/status/1551776758554304513?t=Ey9FU_5uYoYSePAscKq9Sg&s=19
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে নিজের একশোতম ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করে বিরল নজির গড়েন ক্যারিবিয়ান তারকা সাই হোপ। হোপের ১১৫, ক্যাপ্টেন নিকোলাস পুরানের ৭৪ রানে ভর করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ভারতের বিপক্ষে প্ৰথমে ব্যাট করে ৩১১/৬ তুলেছিল। প্ৰথম ওয়ানডেতে ব্যর্থ হওয়া হোপ ওপেনিং জুটিতে কাইল মায়ের্স (৩৯)-এর সঙ্গে ৫৫ বলে ৬৫ যোগ করেন। বড় রানের ভিত গড়ার কাজটা সেরে ফেলেন। দ্বিতীয় উইকেটে সামারা ব্রুকসের (৩৫) সঙ্গে আরও ৬২ রানের পার্টনারশিপও গড়েন হোপ।
মায়ের্স এবং ব্রুকস ফিরে যাওয়ার পরে হোপের সঙ্গে মজবুত পার্টনারশিপ গড়েন অধিনায়ক পুরান। ৭৭ বলে ৭৪ রানের মারকাটারি ইনিংসে পুরান হাফডজন ছক্কা মারেন। আর একটি মাত্র বাউন্ডারিও ছিল। দুজনে তৃতীয় উইকেটে ১২৬ বলে ১১৭ রানের তুলে দেন।
ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে দশম ব্যাটসম্যান হয়ে একশোতম একদিনের ম্যাচে সেঞ্চুরি করার কীর্তি গড়ে নিলেন হোপস। তিনি এরপর ১১৫ রানে আউট হয়ে যান। ১৩৫ বলের ইনিংসে ছিল আটটা বাউন্ডারি, তিনটে ওভার বাউন্ডারি। অক্ষর প্যাটেল এবং দীপক হুডা দুজনেই একটি করে উইকেট নেন। যজুবেন্দ্র চাহাল ১ উইকেট নিলেও অনেক বেশি রান দিয়ে দেন। শেষ ১০ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৯৩ তুলে ৩০০ রানের গণ্ডি টপকে গিয়েছিল। এই স্লগ ওভার গুলো নিয়ে ভাবতে হবে, হেড কোচ রাহুল দ্রাবিড়কে।
ছবি:সৌ টুইটার।