কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশছোঁয়া, এর প্রতিবাদে বামফ্রন্টের শ্রমিক-কর্মচারী সংগঠনের যৌথ মঞ্চের ডাকে ২৮ ও ২৯ মার্চ দু’দিনের দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘট (All India Bandh) শুরু হল। সোমবার জলপাইগুড়ির (North Bengal All India Bandh) রাস্তায় আন্দোলনকারীরা মিছিল ও পিকেটিং শুরু করে। রাস্তায় বের হওয়া ছোট-বড় গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখায়। কিছু ক্ষেত্রে গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। শহরের থানা মোড়, পিসি শর্মা মোড়, কদমতলা, ডিবিসি রোড, বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন ছাড়াও সরকারি অফিসে আন্দোলনকারীরা দলীয় ঝান্ডা লাগিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। এছাড়া টায়ার জ্বালিয়ে চলছে বিক্ষোভ।
যদিও বনধে প্রভাব পড়ল না ডুয়ার্সের চা বাগানগুলোতে। সোমবার সকালে অন্যান্য দিনের মতোই ছবি গেল ডুয়ার্সের চা বাগানগুলোতে। সকাল হতেই বাগানের শ্রমিকরা কাজে যোগদান করলেন। একইভাবে আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন চা বাগানগুলিতেও বনধের প্রভাব পড়নি। অধিকাংশ চা বাগানে শ্রমিকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজে যোগ দিয়েছেন। ধর্মঘটের বিরোধিতা করেছে তৃণমূল চা শ্রমিক ইউনিয়ন। এদিন তৃণমূল চা শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে প্রতিটি চা বাগানে ঘুরে ঘুরে শ্রমিকদের কাজে যোগদানের আহ্বান জানানো হয়েছে।
আন্দোলনকারীরা দলীয় ঝান্ডা লাগিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে
ধর্মঘটের মিশ্র প্রভাব দেখা গেল বালুরঘাট শহর তথা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাজুড়ে। সকালের দিকে বেশকিছু দোকানপাট খুললেও বেলা বাড়তেই চিত্রটা পাল্টে যায়। পথে নেমে সমর্থকদের জোর করে দোকানপাট বন্ধ করতে দেখা যায়। দুপুর গড়াতেই বনধ সমর্থকদের পিকেটিংয়ের জেরে দোকানপাট বন্ধ হতে শুরু করে। বালুরঘাট শহরের বেশ কয়েকটি শপিং মল জোর করে বন্ধ করে দেয় সমর্থকরা। যার জেরে কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তবে জেলাতে সরকারি অফিসগুলো নিত্যদিনের মতো খোলা রয়েছে। উপস্থিতির হারও বেশ ভালোই।
আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটায় এদিন সকালে বনধের সমর্থনে পথে নামে বামেরা। সরকারি বাস পথে নামলেও বেসরকারি গণপরিবহণ ব্যবস্থা একেবারেই স্তব্ধ থাকায় নাজেহাল হতে হয়েছে যাত্রীদের। খোলেনি দোকানপাট। তবে সরকারি নির্দেশ মেনে সচল রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যদিও তাতে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির হার ছিল নগণ্য। বনধের বিরোধিতায় সকাল থেকেই পথে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। উত্তেজনা ছড়ায় ধূপগুড়িতেও। বনধ সমর্থকদের সঙ্গে পুলিসের বচসা বাধে। দোকান বন্ধ করার জন্য আবেদন করতে গেলে পুলিস বাধা দেয়। আর তাতেই উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
ধূপগুড়ি শহরের রাস্তায় মিছিল, গাড়ি আটকে পিকেটিং চলছে। বন্ধ রয়েছে সমস্ত দোকানপাট। রাস্তায় নামেনি কোনও বেসরকারি বাস। সরকারি বাস রাস্তায় নামলেও যাত্রী একদমই নেই বললেই চলে। সেই সঙ্গে আটকে দেওয়া হয় দূরপাল্লার লরি থেকে শুরু করে সরকারি বাস। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিসবাহিনী। পুলিসের বিরুদ্ধে দলীয় ঝান্ডা খুলে ফেলার অভিযোগ এনেছে সিপিআইএম। সব মিলিয়ে দু’দিনের বনধের প্রথম দিনেই টানটান উত্তেজনা ধূপগুড়িতে।