পেট্রোপণ্য থেকে ভোজ্য তেল, সবকিছুর দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে।যার প্রভাব পড়েছে আম জনতার ঘরেও। ভোজ্য তেল কিনতে গিয়ে হাতে ছ্যাঁকা লাগছে সাধারনের।তাই পূর্ব বর্ধমান জেলার জঙ্গলমহল এলাকার আদিবাসী ও প্রান্তিক মানুষজনের এখন ভরসা কুচরা ফলের তেল।
আরও পড়ুন ফেরিওয়ালা সেজে কলকাতার পথে পথে খেলনা বিক্রি করত জেএমবি জঙ্গিরা
প্রায় দুই বছর ধরে লকডাউনে রুজি-রোজগার শিকেয় উঠেছে। এই এলাকার অধিকাংশ মানুষ মজুর ও জমিতে কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। করোনা সেই কাজ কেড়ে নেওয়ায় মহা সমস্যায় পড়েছেন এলাকার আদিবাসী সম্প্রদায়। রান্নাবান্না করতে গিয়ে সামান্য তেল কেনারও উপায় নেই তাঁদের। গায়ে মাখার তেল জোগাড় তো সেখানে বিলাসিতা মাত্র। ফলে আউসগ্রাম এর জঙ্গল থেকে কুচরা ফল সংগ্রহ করে বহু পরিশ্রমে তেল বের করছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন নজির গড়ে জুনিয়র উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন হলেন ১৭ বর্ষীয় সমীর বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রথমে কুচরা ফলগুলিকে সংগ্রহ করে বীজগুলিকে একটি বড় পাত্রে কয়েকদিন ভিজিয়ে রাখা হয়। এরপর ফলের বীজের খোসা কিছুটা নরম হলে সে গুলি ভেঙে নেওয়া হয়। তারপর বীজগুলিকে আরও একদিন ভিজিয়ে বা সেদ্ধ করে শেষে স্থানীয় ঘানিতে গিয়ে তেল বের করা হয়। সেই তেল দিয়ে চলে রান্না-বান্না ও প্রসাধনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
আরও পড়ুন জ্বালানী আগুন, কাঠের উনুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদে মহিলারা
এই তেল খানিকটা বিস্বাদ হলেও একপ্রকার বাধ্য হয়েই রান্নাবান্না এবং গায়ে মাখার কাজে ব্যবহার করছেন তাঁরা।কুচরা বা মহুয়া গাছে সুপারির মতো আকারের ফল হয়। জুন থেকে জুলাই মাসের মধ্য এই ফল পরিপক্ব হয়।স্থানভেদে একে মহুলা, মধুকা, মোহা, মোভা, মহুয়া ইত্যাদি নামে ডাকা হলেও আউশগ্রামের জঙ্গলমহলের আদিবাসী লোকজন একে কুচরা ফল নামেই জানেন। এই ফলের নির্যাস বা তেল পুরোনো ক্ষত ও কীট দংশনেও বিষ-ব্যথানাশক।এই এলাকার সাঁওতালেরা মশার যন্ত্রণা, কীটপতঙ্গের দংশনের ক্ষেত্রে মহুয়া বীজের তেল ব্যবহার করে থাকেন। তাঁদের মতে এটা রান্না তো বটেই , গায়েও বারোমাস মাখা যায়। আউসগ্রামের জঙ্গল থেকে কুচরা ফল সংগ্রহ করে তা থেকে তেল বানিয়েই দিন কাটাচ্ছেন এই এলাকার বহু আদিবাসী মানুষ।
আরও পড়ুন করোনা কাঁটায় এবছরও গড়াবে না মহিষাদলের রথের চাকা