দুর্গাপুর: করোনাকালে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ স্কুল। ফলে অচল হয়ে পড়ে আছে পুলকার। অন্যদিকে তেলের দামও আকাশছোঁয়া। মন্দা দেখা দিয়েছে গাড়ি ব্যবসায়। সেই কারণেই পেটের দায়ে পানাগড়ের স্ক্রাপ বাজারে স্ক্রাপ করে লোহার দরে বিক্রি করে দিচ্ছে পুলকার মালিকরা। আর ফিরে যাচ্ছেন অন্য পেশায়।
প্রায় ছ’মাসে রাজ্য সহ ভিন রাজ্যের কয়েকশো পুলকার বাস কাটিং হয়েছে কাঁকসা থানার পানাগড়ের স্ক্র্যাপ ডিলারের কাছে। পুলকার মালিকদের দাবি, গাড়ি চলাচল না করায় বিকল হয়ে পড়ছে। পাশাপাশি রোজগার না থাকায় বাসগুলি রক্ষণাবেক্ষণ করাও মুশকিল। নতুন নতুন বাস কাটিং করতে গিয়ে স্ক্র্যাপ ডিলার ব্যবসায়ীরাও হতবাক হয়ে হচ্ছেন।
আরও পড়ুন- ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলকে মনে করালেন দুর্গাপুরের ফ্লোরা
গত বছরে হঠাৎই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দেশ জুড়ে হু হু করে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। করোনা সংক্রমণ রুখতে সরকার একাধিক পদক্ষেপ নেয়। তার ফলে ঘোষণা করা হয় লকডাউন। বর্তমানে লকডাউন উঠে গেলেও চলছে করোনা বিধিনিষেধ ফলে খোলেনি স্কুল।
ফলে পুল কার পরিষেবা দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। সেই কারণে পুলকার বাস ও পিক- আপ ভ্যান গুলি পরিচর্যা সম্ভব হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে অধিকাংশ পুলকার বাস মালিকরা ক্ষতি থেকে বাঁচতে গাড়িগুলি স্ক্রাব করে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁরা রাজ্যের সব থেকে বড় পানাগড় স্ক্র্যাব ডিলারের কাছে লোহার দরে বিক্রি করছে দামি গাড়ি গুলি। স্ক্র্যাপ ডিলাররা ওই বাস গুলির কেটে কেটে বিক্রি করছেন।
আরও পড়ুন- সঙ্কট মেটাতে দুর্গাপুরে অক্সিজেন প্লান্ট
স্ক্র্যাপ ডিলার সম্রাট সিং বলেন, ‘যে সব গাড়ি পুরোনো হয়ে গিয়েছে সরকারি নিয়মে যেসব গাড়ির রাস্তায় চলাচলের মেয়াদ শেষ হয়েছে। সেই সব গাড়ি স্ক্র্যাপ হিসেবে বিক্রি হয়। দীর্ঘদিন ব্যবসা করে করোনা পরিস্থিতিতে এই প্রথম দেখলাম প্রায় নতুন নতুন স্কুল বাস স্ক্র্যাপ হচ্ছে। কি ভয়াবহ পরিস্থিতি। বাস মালিকরাও অসহায় কি করবে। বাস গুলি রক্ষাণাবেক্ষণের আর সাধ্য নেই তাঁদের। গত ছ’মাসে কয়েকশো স্কুল বাস এই এলাকায় কাটিং হয়েছে। ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা দামের বাস লোহার দরে বিকিয়েছে মালিকরা।’
পুলকার দুর্গাপুর ভিকেল অনার অ্যাসোসিয়েশনের দুই বর্ধমান জেলার সম্পাদক টোটোন দাস বলেন, ‘দুই জেলায় ছোটো বড় মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার পুলকার ছিলো। তাতে ৩০ হাজার বেকার যুবকদের কর্ম সংস্থান ছিল।আমদের কথা কেউ ভাবেও না। গাড়ি গুলি নষ্ট হচ্ছে। বিক্রি করতে চাইলে কেউ কিনছেও না। তেলের দাম অগ্নিমুখী। যে যা পারছে করছে। স্কুল খোলা অনিশ্চিত থাকায় আমরা সকলে অন্য পেশা বেছে নিয়েছি।’