করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত সারা দেশ। এই পরিস্থিতিতে এবার ২১ জুন থেকে রাজ্যগুলিকে বিনামূল্যে টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। সোমবার জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে একথা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “করোনার বিরুদ্ধে গোটা দেশ কঠিন লড়াই করছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের বিরুদ্ধে লড়াই চলছে। টিকার চাহিদার থেকে উৎপাদনকারী সংস্থার সংখ্যা কম। দ্বিতীয় ঢেউয়ে অক্সিজেনের চাহিদা অত্যাধিক পরিমাণে বেড়ে গিয়েছিল। গত ৫০ বছরের ইতিহাস দেখবেন, বিদেশ থেকে ওষুধ, টিকা আনতে অনেক সময় লেগে যেত, টিকাকরণ শুরুও করা যেত না দীর্ঘদিন। পোলিও সহ একাধিক টিকার জন্য দশকের পর দশক অপেক্ষা করতে হয়েছে।“
“বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম মেনে টিকাকরণ করছে ভারত কিন্তু পৃথিবীর বহু দেশেই এখনও টিকাকরণ চালু হয়নি। করোনা থেকে যাঁদের ঝুঁকি বেশি, ভারতে তাঁদের দিয়েই টিকাকরণ শুরু হয়েছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আগে যদি প্রথম সারির করোনা যোদ্ধাদের টিকা না দেওয়া হতো তাহলে কী হত একবার ভেবে দেখুন। বেশিরভাগ স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকা দেওয়া হয়েছে বলেই তাঁরা নিশ্চিন্তে সেবার কাজ করে চলেছেন।“
“দেশে ২৩ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া হয়ে গেছে। আমি যখন কথা বলছি, তখন এই টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়েছে। কম সময়ের মধ্যে আমরা অনেকটা লক্ষ্য পূরণ করছি। গতবছর এপ্রিলে আমরা টিকা টাস্ক ফোর্স তৈরি করেছি। আরও দ্রুত টিকার সরবরাহ বাড়বে। দেশে সাতটি সংস্থা টিকা তৈরি করছে। ৩টি সংস্থা আলাদা আলাদা টিকার ট্রায়াল চালাচ্ছে। অন্য দেশ থেকেও টিকা কেনার বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। শিশুদের জন্যও দুটি টিকার ট্রায়াল চলছে। এত কম সমযের মধ্যে টিকা তৈরি করা, মানবতার জন্য অনেক বড় পাওয়া।“
“এরমধ্যে অনেকেই প্রশ্ন করেছেন কেন রাজ্যগুলিকে বিনামূল্যে টিকা দেওয়া হচ্ছে না। সংবিধানে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য পরিষেবা রাজ্যের বিষয়। সেই কারণে নিয়মের উল্লেখ করে রাজ্যগুলিকে নির্দেশ পাঠায় কেন্দ্র। এবছরের ১৬ জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয সরকার টিকাকরণ প্রক্রিয়া চালিয়েছে। রাজ্যগুলি জানিয়েছে, এই প্রক্রিয়া রাজ্যগুলির উপর ছেড়ে দেওয়া হোক। ২১ জুন থেকে ১৮ ঊর্ধ্বদের জন্য রাজ্যগুলিকে বিনামূল্যে টিকা দেবে কেন্দ্র। রাজ্যগুলিকে টিকা কিনে দেবে কেন্দ্র। বেসরকারি হাসপাতালগুলি টিকা পিছু ১৫০ টাকা পরিষেবা কর নিতে পারবে।“
ভারতে টিকাকরণের উন্নতি হয়েছে বর্তমান সরকারের আমলে বললেন মোদি। “মনে রাখবেন করোনা টিকা সুরক্ষা কবচ। টিকার গতি বাড়াতে আমরা মিশন ইন্দ্রধনুষ চালু করেছি। এর মাধ্যমে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় টিকা দেওয়া হবে। টিকাকরণের মাত্রা এখন ৯০ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। আমরা ১০০শতাংশ টিকাকরণের দিকে যাচ্ছিলাম, তখনই করোনা আসে। শিশু, দরিদ্র মানুষের টিকাকরণের ব্যবস্থা করেছে সরকার।“