ভাড়া যখন আকাশছোঁয়া, সেই সময় সাংসদ কোটার অ্যাম্বুল্যান্স পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদায়। অতিমারী আবহে অ্যাম্বুল্যান্সের অভাবে যখন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হচ্ছে, ১০ কিলোমিটার যেতে ভাড়া যখন ৫০০০-১০০০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে, সেই সময়ই পশ্চিম মেদিনীপুরে দেখা গেল সম্পূর্ণ অন্য দৃশ্য! সাংসদ কোটায় পাওয়া অ্যাম্বুল্যান্স এই চরম সময়ে পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। ঘটনাটি, নারায়ণগড় ব্লকের বেলদা থানার ব্যাঙদা গ্রামের। স্থানীয়দের অভিযোগ, গত ২ বছরের বেশি সময় ধরে পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে রাজ্যসভার সাংসদের আর্থিক আনুকূল্যে পাওয়া অ্যাম্বুল্যান্স। শাসকদল ঘনিষ্ঠ যে ক্লাবকে এই অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়া হয়েছিল, তাদের অবশ্য দাবি- সারাই ও রক্ষণাবেক্ষণ (Repairing and Maintenance) এর খরচ কুলোতে না পারায়, গত বছর থেকে চালানো হয়নি এই অ্যাম্বুল্যান্স।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে তৃণমূল সাংসদ দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের তহবিল থেকে কেনা গ্রামীণ পুরসভাগুলির জন্য নির্ধারিত প্রকল্পে ‘জীবন সাথী’ নামে এই অ্যাম্বুল্যান্সটি দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। বেলদা থানার ব্যাঙদা গ্রামের ‘নিবেদিতা সংঘ’ ক্লাবের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল এই অ্যাম্বুল্যান্স। ক্লাবের সম্পাদক তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা উৎপল মহাপাত্র জানান, ‘কিছুদিনের জন্য এই অ্যাম্বুলেন্সটি পড়ে রয়েছে এটা ঠিক। আমাদের যিনি ড্রাইভার (চালক) ছিলেন, তিনি বেশকিছু সমস্যা করলেন। অ্যাম্বুল্যান্স থেকে আয় সেভাবে হয়নি। তবে, খারাপ হয়ে যাওয়ার পর পুনরায় অর্থ খরচ করে এবং ড্রাইভার রেখে চালানোর মতো অর্থ জোগাড় করতে পারিনি।’ এর জন্য তিনি দায় চাপিয়েছেন চালকের ওপর। যদিও বিরোধীদের দাবি, ‘অতিমারীর এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে একটা অ্যাম্বুলেন্স পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে, এর থেকে দুর্ভাগ্যের আর কি হতে পারে! আসলে, সেই সময় চিটফান্ডের টাকায় শাসক ঘনিষ্ঠ বহু ক্লাবকে এরকম অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হয়েছিল। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তা নষ্ট হচ্ছে। এর দায়, শাসকদল ও তাদের ঘনিষ্ঠ ক্লাব ও সংস্থা গুলিকেই নিতে হবে।’ ক্লাবের এক সদস্য বললেন, ‘বিরোধীরা কে কি বলছে জানিনা। গতবারের কোভিড পরিস্থিতিতেও তা চলেছিল। এবারও, লকডাউন উঠলে অ্যাম্বুল্যান্সটি সারানোর ব্যবস্থা করা হবে।’