রবিবাসরীয় অপরাহ্ণে ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ইউরো কাপের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ড মুখোমুখি হচ্ছে ক্রোয়েশিয়ার। ২০১৮-র বিশ্ব কাপের সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়া হারিয়ে দিয়েছিল ইংল্যান্ডকে। কিন্তু তার পর থেকে টেমস নদী দিয়ে অনেক জল বয়ে গেছে। এই তিন বছরের গ্যারেথ সাউথগেটের ইংল্যান্ড যত শক্তিশালী হয়েছে, যত ভাল হয়েছে তাদের পারফরম্যান্স ঠিক ততটাই পিছিয়ে গেছে জাকো দালিকের ক্রোয়েশিয়া। বিশ্ব কাপের পর লুকা মদরিচের দল ২০১৮ সালে হেরেছে স্পেন এবং ইংল্যান্ডের কাছে। গত বছর উয়েফা নেশনস লিগে ক্রোয়েশিয়া হেরে গেছে পর্তুগাল, ফ্রান্স এবং সুইডেনের কাছে। তিন বছর আগের বিশ্ব কাপের নায়ক ইভান রাকিটিচ এবং মারিও মান্ডুকিচ অবসর নেওয়ায় যে শূণ্যতার সৃষ্টি হয়েছে তা এখনও পূরণ করতে পারেননি মদরিচের সতীর্থরা।
অন্য দিকে গ্যারেথ সাউথগেটের টিম শক্তিশালী থেকে আরও শক্তিশালী হয়েছে। এখন ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে তারা আছে চার নম্বরে। বেলজিয়াম, ফ্রান্স এবং ব্রাজিলের পরেই। ক্রোয়াশিয়া আছে ১৪ নম্বরে। তিন বছর আগে দু দলের শেষ সাক্ষাৎকারে ইংল্যান্ড ২-১ গোলে হারিয়ে দিয়েছিল ক্রোটদের। টানা ছটা ম্যাচ জিতে ইংল্যান্ড রবিবার মাঠে নামছে ডি গ্রূপের প্রথম ম্যাচে। তাদের এক নম্বর প্লেয়ার অধিনায়ক হ্যারি কেন আছেন দুর্দান্ত ফর্মে। তাঁর টিম টটেনহাম হসপার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলেও কেন কিন্তু ই পি এল-এর টপ স্কোরার। তাঁর পাশে রহিম স্টার্লিং কিংবা মার্কাস র্যাশফোর্ডরা থাকলেও সাউথগেট কিন্তু রবিবার সিঙ্গল স্ট্রাইকারেই মাঠে নামবেন। তিনি দল সাজাচ্ছেন ৪-২-৩-১ ছকে। গোলে জর্ডন পিকফোর্ড এই মুহূর্তে ইউরোপের অন্যতম সেরা গোলকিপার। চার ডিফেন্ডার হবেন কাইল ওয়াকার, জন স্টোনস, টাইরোন মিংস এবং লুকে শ। দুই ডিফেন্সিভ মিডিও হবেন ডেকলান রাইস এবং জুডে বেলিংটন। তিন আ্যাটাকিং মিডিও হবেন ফিল ফডেন, মেসন মাউন্ট এবং জ্যাক গ্রিলিশ। সামনে হ্যারি কেন। যতই আপ ফ্রন্টে তাঁর এক গাদা গোল করার লোক থাকুক না কেন, ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে সাউথগেট একটু ডিফেন্স সামলে আ্যাটাকে যাওয়ার কথা ভাবছেন। অন্তত শুরুতে। পরে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা।
এবারের টুর্নামেন্টে ফ্রান্সের সঙ্গে ইংল্যান্ডকেও অন্যতম ফেভারিট ধরা হচ্ছে। ডি গ্রূপে তাদের সঙ্গে আর আছে চেক প্রজাতন্ত্র এবং স্কটল্যান্ড। ক্রোয়েশিয়ার বাঁধা পেরিয়ে গেলে বাকি দুটো ম্যাচে তাদের জয় পাওয়া খুব কঠিন হবে না। তবে ইংল্যান্ডের অতীত খুব ভাল নয়। তারা কখনও ইউরো চ্যাম্পিয়ন হয়নি। ফাইনালও খেলেনি। এমন কি নিজেদের দেশে যখন ইউরো কাপ হয়েছিল সেই ১৯৯৬ সালেও তাদের দৌড় ছিল সেমিফাইনাল পর্যন্ত। বিশ্ব কাপ জয়ও এক বারই সেটাও ১৯৬৬ সালে। সব মিলিয়ে ইংল্যান্ডের কাছ থেকে দেশবাসীর বিরাট প্রত্যাশা এবার। গ্রূপের তিনটি ম্যাচ ইংল্যান্ড খেলবে ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে। সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল হবে সেখানেই। দর্শকদের প্রবেশাধিকার থাকছে। তাই প্রায় হোম অ্যাডভ্যান্টেজ নিয়েই মাঠে নামছে ইংল্যান্ড। অতীত তাদের বিপক্ষে হলেও বর্তমান কিন্তু সঙ্গেই আছে। এখন দেখার ভবিষ্যৎটা কেমন হয়।