ইউক্রেন–২ উত্তর ম্যাসিডোনিয়া–১
(ইয়ামোলেঙ্কো, ইয়ারেমচুক) (আলোস্কি)
্এবারের ইউরো কাপে কোনও গ্রূপই সহজ নয়। কিন্তু একই গ্রূপে ফ্রান্স, পর্তুগাল এবং জার্মানি পড়ে যাওয়ায় সেই গ্রূপটাকে বলা হচ্ছে গ্রূপ অব ডেথ। তেমনই সি গ্রূপটাকে মনে হয় বলা যেতে পারে সহজতম গ্রূপ। নেদারল্যান্ডেসের সঙ্গে আছে অস্ট্রিয়া, ইউক্রেন এবং উত্তর ম্যাসিডোনিয়া। ইউরোপের দেশগুলিকে যদি ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এবং শুদ্র–এই চার ভাগে ভাগ করা যায় তা হলে এই গ্রূপের নেদারল্যান্ডস থাকবে প্রথম গ্রূপে, অস্ট্রিয়া এবং ইউক্রেনকে রাখতে হবে বৈশ্যদের গ্রূপে আর শুদ্র গ্রূপে রাখতে হবে উত্তর ম্যাসিডোনিয়াকে।
প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে তুমূল লড়াই করে ০-২ পিছিয়ে পড়েও ইউক্রেন এক সময় ২-২ করে ফেলেছিল। কিন্তু তার পর গোল খেয়ে ম্যাচটা হেরে যায়। সেই খান থেকে তারা দুর্দান্তভাবে ফিরে এসে উত্তর ম্যাসিডোনিয়াকে হারিয়ে দিয়ে নক আউটে যাওয়ার লড়াইয়ে টিকে রইল। শেষ দিকে পেনাল্টি থেকে গোল করার সুযোগ নষ্ট না করলে তারা ব্যবধানটাকে বাড়াতে পারত। কিন্তু তাদের প্রাধান্য নিয়ে গোটা ম্যাচে কোনও সংশয় ছিল না। নেদারল্যান্ডেসের বিরুদ্ধে যে দুজন গোল করেছিলেন সেই দুজনেই বৃহস্পতিবার বুখারেস্টের স্টেডিয়ামে গোল করলেন। এই দুজনের উপরেই দাঁড়িয়ে আছে ইউক্রেনের আক্রমণ ভাগ। ওঁরা হলেন ই পি এল-এর ওয়েস্ট হ্যামের আন্দ্রেই ইয়ামোলেঙ্কো এবং বেলিজিয়ামের জেন্ট ক্লাবের রোমান ইয়ারেমচুক। ২৯ মিনিটে কর্নার থেকে বল পেয়ে খুবই তৎপরতার সঙ্গে প্লেসিং করে গোল করলেন আন্দ্রেই। আর পাঁচ মিনিট যেতে না যেতেই রোমানের দ্বিতীয় গোল সম্মিলিত আক্রমণ থেকে।
বিরতির আগে জোড়া গোল পেয়ে আন্দ্রে শেভচেঙ্কোর দল কি একটু আত্মতুষ্ট হয়ে গিয়েছিল? ২০০৬-এর বিশ্ব কাপে শেভচেঙ্কোর নেতৃত্বে ইউক্রেন ইতালি বিশ্ব কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল। কিন্তু তারপর থেকে তারা আর না মহাদেশীয় মহাযুদ্ধ না বিশ্ব যুদ্ধে অংশ নেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। এবার পেরেছে। এবং গ্রূপের শেষ ম্যাচে অস্ট্রিয়াকে হারাতে পারলে তারা নক আউটের ভিসা পেয়ে যাবে।
আত্মতুষ্টির জন্যই হোক কিংবা ম্যাসিডোনিয়ার ফুটবলারদের লড়াই–যে কোনও কারণেই হোক তারা একটি গোল শোধ করে ফেলল পেনাল্টি থেকে। তাদের স্ট্রাইকার পান্ডেভকে বক্সের মধ্যে ফাউল করা হলে রেফারি পেনাল্টি দেন। এবং লিডস ইউনাইটেডের প্লেয়ার আলোস্কির শটটা সেভ করে ফেলেছিলেন ইউক্রেন গোলকিপার বুশচান। কিন্তু রিবাউন্ডে গোল করে ফেললেন আলোস্কি। এর পরেও একটা পেনাল্টি দেওয়া হল ভার-এর সাহায্য নিয়ে। কিন্তু এবার ইউক্রেনের মালিনোভস্কির শট বাঁচিয়ে দিলেন ম্যাসিডোনিয়ার গোলকিপার দিমিত্রিভেস্কি। পর পর দুই ম্যাচে হেরে এবারের মতো ইউরো থেকে বিদায় নিল উত্তর ম্যাসিডোনিয়া। আবির্ভাবে বড় কিছু করা তাদের পক্ষে সম্ভব হল না। যেটা গত ইউরোতে করেছিল আইসল্যান্ড, কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে।
ব্রাহ্মণ-ক্ষত্রিয়দের যুদ্ধে শুদ্ররা আর কত লড়াই-ই বা করতে পারে? অতএব…