এয়ার টিকিটের টাকা ফেরতের নামে অভিনব কায়দায় প্রতারণার ফাঁদে হরিদেবপুরের বাসিন্দা। গত ৩১ মে গুরগাঁয়ে কর্মরত হরিদেবপুরের বাসিন্দা জনৈক অনিন্দিতা বিষ্ণু ইস মাই ট্রিপের মাধ্যমে ৫,৫০৮ টাকা দিয়ে গো এয়ারে দিল্লি যাওয়ার টিকিট কাটেন। করোনা আবহাওয়াতে নিজের শহর কলকাতাতে ফিরে এসেছিলেন দিল্লির বেসরকারি সংস্হায় কর্মরত অনিন্দিতা। কিন্তু সম্প্রতি দিল্লির অফিস থেকে কাজে যোগ দিতে বলায় ২ জুন গো এয়ারের ২০ মিনিটের বিমান যাত্রা টিকিট কিনেছিলেন। ২ জুন তাঁর দিল্লি যাওয়ার দিনেই ভোর রাতে একটি এসএমএস আসে, যেখানে বলা হয়, তাঁর বিমানটি রি-সিডিউল হয়েছে। সরাসরি দিল্লির যাওয়ার আগে গৌহাটি হয়ে যাবে। সকাল ৯ টা ২০ নাগাদ বিমান কোম্পানি থেকে ফোন করে বিষয়টি অনিন্দিতাকে জানানো হয়। প্রথমে বিমানের সময় বদলে ২ টৌ ২০ মিনিটের জায়গায় ১টা ৫০ মিনিট করা হয়, পরে আবার তা বাতিল হয়। এরপর অনিন্দিতাকে পরবর্তী টিকিটের টাকা ফেরতের কথা বললে অনিন্দিতা টাকা ফেরত নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা টেলিফোনের মাধ্যমেই বিমান সংস্হার প্রতিনিধিকে জানিয়ে দেয়।
বিমান সংস্হার প্রতিনিধির পরামর্শ মত গুগুল সার্চ করে প্রথম যে নম্বরটি পায় তাতে অনিন্দিতা ফোন করলে অপর প্রান্তের প্রতিনিধি বিমান যাত্রার টাকা ফেরত সংক্রান্ত নানান পরামর্শ দিতে থাকেন। পরামর্শ মোতাবেক অনিন্দিতা তাঁর বোন রচয়িতার মোবাইল থেকে ফোনের অপর প্রান্তের প্রতিনিধির পরামর্শ অনুয়ারি অ্যাপস খোলে। এই কথপোকথনের সময় অপর প্রান্তের প্রতিনিধি জানতে চান, কোন ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টিকিটটি কিনেছিলেন। অনিন্দিতা আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের কথা বললে ওই ব্যাঙ্কের অ্যাপস ডাউনলোড করে অ্যাকাউন্ট নম্বরটা লিখতে বললে অনিন্দিতা অ্যাকাউন্ট নম্বরটা লিখলেও পরবর্তী সময়ে কোনো ওটিপি আসেওনি বা শেয়ারও করেননি। এই ভাবে কথপোকথপ চলার মাঝেই টেলিফোনে অপর প্রান্তের প্রতিনিধি বলে, কিছু টাকা অনিন্দিতার অ্যাকাউন্টে ঢুকছে। বাকি টাকা ঢোকানোর জন্য ডেবিট কার্ডটি স্ক্যান করে পাঠাতে বললে তাঁর সন্দেহ হয়। এরপর অনিন্দিতা পুলিশকে জানানোর কথা বলা মাত্রই ফোনের অপর প্রান্তের প্রতিনিধি ফোনটি কেটে দেন। তৎক্ষণাৎ অনিন্দিতা মোবাইলে ম্যাসেজ আসে তার আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে ৬৬,১৮০ টাকা ডেবিট হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে অনিন্দিতাদেবী প্রশ্ন তোলেন ওটিপি না দেওয়া সত্বেও কি করে ব্যাঙ্ক এত বড়ো অঙ্কের টাকা ডেবিট করাল? তাহলে গ্রাহকদের সুরক্ষা কোথায়? রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বারংবার ওটিপি শেয়ারে মানা করছে। এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে যে, অনিন্দিতা ওটিপি শেয়ার না করলেও কিভাবে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ এতো বড়ো রকমে অঙ্কের টাকা ডেবিট করল? খোওয়া যাওয়া টাকা উদ্ধারে অনিন্দিতা লালবাজারের গোয়েন্দা শাখার শরণাপন্ন হন। সেই সঙ্গে তিনি অভিযোগ জানিয়েছেন আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অ্যামবিউশমেন্ট শাখায়। এখন অনিন্দিতা ও তাঁর বাবা যিনি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের প্রাক্তন কর্মচারী, তাঁদের আশা লালবাজারের গোয়েন্দারা তাঁদের টাকা ফেরত পেতে সাহায্য করবেন ও তাঁরা খোয়ানো টাকা ফিরে পাবেন।