এগিয়ে এলো না প্রতিবেশীরা। নীরব দর্শকের ভূমিকায় স্থানীয় প্রশাসন। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অশীতিপর বৃদ্ধের সৎকারে এগিয়ে এলেন সেই রেড ভলান্টিয়াররা। ঘটনাটি ঘটেছে খড়্গপুর গ্রামীণের গোপালী এলাকায়। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিন ধরেই জ্বরে ভুগছিলেন ৮১ বছরের হরিপদ চৌধুরীর, তারপর বাড়িতেই মৃত্যু হয় তাঁর। কোভিড সন্দেহে প্রতিবেশী থেকে গ্রামের মানুষ, সহযোগিতা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। এমনকি গ্রামের শ্মশানে সৎকারের কাজেও বাধা দেওয়া হয়। স্থানীয় পঞ্চায়েত নীরব থেকে এড়িয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে সৎকারের কাজে এগিয়ে এল রেড ভলান্টিয়ার্সের সদস্যরা। হরিপদ চৌধুরীর দেহ সৎকার করা হয় সিপিআইএম কর্মী রঞ্জন দে’র ফাঁকা জমিতে।
খড়্গপুর গ্রামীণ থানার গোপালী গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার জঙ্গল ঘেরা পশ্চিমপাত্রী গ্রামের বাসিন্দা হরিপদ চৌধুরী জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সোমবার বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বৃদ্ধ বয়সে একমাত্র মেয়ের বাড়িতেই থাকতেন তিনি। মেয়েরও মৃত্যু হয় ৬ বছর আগে। নাতি কৃষ্ণ চৌধুরী ও নাত বউয়ের কাছেই থাকতেন তিনি। দিন মজুরী করেই সংসার চলত। এই পরিস্থিতিতে ক’দিন জ্বরে ভুগে মৃত্যু হয় বৃদ্ধ হরিপদর। সৎকারের জন্য গ্রামবাসীদের সহযোগিতা এবং সরকারী সাহায্য না পেয়ে মুষড়ে পড়েন নাতি কৃষ্ণ চৌধুরী। সেই খবর পৌঁছয় গোপালীতে রেড ভোলেন্টিয়ার সহায়ক কেন্দ্রে। গোপালী লোকাল কমিটির যুবদের রেড ভেলেন্টিয়ার টিম উত্তম নাগ, প্রতীক সরকার, নগেন্দ্রনাথ মান্না, শুভম রায়, আশিস বাগরা অর্থ দিয়ে জ্বালানির কাঠ সহ দেহ নিয়ে যাওয়ার সরঞ্জাম জোগাড় করেন। পরে নিজেরাই হরিপদর দেহ নিজেদের কাঁধে করে নিয়ে গিয়ে ফাঁকা মাঠে সৎকার করেন। যদিও, স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “আমরা প্রথমে খবর পাইনি। সব কিছু যখন জানতে পারি, তখন ওনারা অন্য ব্যবস্থা করে নিয়েছিলেন।” কৃষ্ণ অবশ্য কাউকে দোষ দেননি। তবে, চোখের জলে দাদু’কে বিদায় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই অচেনা যুবদের মহানুভবতাও মুগ্ধ করে তাঁকে।