আক্ষেপের সুর ঝরে পড়ল লালবাজারের কর্তার গলায়। ভ্যাকসিন দেওয়াতে পারলে হয়তো ওই আটজনকে বাঁচানো যেত! পুলিশ কর্তার কথায়, ওই আটজনের মধ্যে সাতজনের অ্যালার্জি এবং বাইপাস সার্জারি সংক্রান্ত সমস্যা থাকায় তাঁদের ভ্যাকসিন নিতে দেননি চিকিৎসকেরা। একজনের প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন নেওয়া থাকলেও বাঁচানো যায়নি তাঁকেও। তা না হলে দ্বিতীয় ঢেউয়ে করোনার বিরুদ্ধে মৃত্যুহীন লড়াই চালানো যেত! প্রসঙ্গত, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সঙ্গে লড়াইয়ে রবিবার পর্যন্ত কলকাতা পুলিশের ৮জন কর্মীর প্রাণ গিয়েছে।
লালবাজারের ওই পুলিশ কর্তার কথায়, ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হতেই ‘ফ্রন্টলাইনার’ হিসেবে লড়াই করা কলকাতা পুলিশের ৩৩ হাজার পুলিশকর্মী ও আধিকারিককে প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়। দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিনও পেয়েছেন কুড়ি হাজারের বেশি পুলিশকর্মী। তার ফলও মিলেছে হাতেনাতে। গতবছর করোনার প্রথম ঢেউয়ে কলকাতা পুলিশের কর্মী ও আধিকারিক মিলে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৪,১৪৭ জন। এবছর সেই সংখ্যাটা নেমে এসেছে ৬১৯ এ। এবছর যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ৬০ শতাংশের ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ এবং বাকিদের প্রথম ডোজ নেওয়া হয়ে গিয়েছে। আক্রান্তরা তাই করোনার সঙ্গে লড়াই করে সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছেন এবং আসছেন। বর্তমানে মাত্র ২১ জন করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন।
গত বছর সাবধানতা অবলম্বন করলেও বাহিনীর ২৩ জনকে প্রাণ দিতে হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে একজন এসি ও পাঁচজন ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার অফিসার ছিলেন। কিন্তু পুলিশকর্মীরা তো আর হাত-পা গুটিয়ে ঘরে বসে থাকতে পারবেন না। সাধারণ মানুষের প্রয়োজনে বাহিনীকে রাস্তায় মানুষের সঙ্গে থেকেই কাজ করতে হবে। সেই কারণে এবছর ভ্যাকসিনকে হাতিয়ার করেই লড়াই শুরু হয়েছে। সময়মতো ভ্যাকসিন নেওয়া এবং মাস্ক, স্যানিটাইজার নিয়ে ডিউটি করার জন্য লালবাজার থেকে বারে বারে নির্দেশ দিচ্ছেন পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র। আটজনের মৃত্যু হয়েছে, আর নয়। নবম মৃত্যু সংবাদ যাতে আর শুনতে না হয়, তা নিয়েই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ লালবাজার…