সোমবার নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে নদী বাঁধের স্থায়ী সমাধানের ওপর জোর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশিষ্ট পরিবেশবিদ কল্যাণ রুদ্র’র নেতৃত্বে ২৪ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করল রাজ্য সরকার। যারা প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রকৃতি সহায় প্রকল্পে কিভাবে এই দুর্যোগ থেকে সাধারণ মানুষকে বাঁচানো যায় তার বিষয়ে রিপোর্ট জমা দেবে। আগামী ১১ এবং ২৬ জুন ভরা কোটালের সময় প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যশ এর ফলে এখনো বহু এলাকায় নোনা জল জমে রয়েছে। যতদিন ওই জল জমে থাকবে ততদিন সাধারণ মানুষের যাতে পানীয় জলের কোন সমস্যা না হয় সেদিকেও নজর দিতে হবে। ’ যশের তাণ্ডবে ৩১৭টি নদী বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ১০ তারিখের মধ্যে সব নদী বাঁধের কাজ শেষ হয়ে যাবে শুধু মহেশতলার কাজ শেষ হবে আগামী ২৩ জুনের মধ্যে।
সামনের ১১ এবং ২৬ জুন ভরা কোটালর কথা মাথায় রেখে মৌসুমী এবং সাগরদ্বীপের কাজ শেষ হবে জুলাই মাসে। এই ভরা কোটালে এই দুটি দ্বীপে প্রায় কুড়ি হাজার গ্রামবাসী আক্রান্ত হতে পারেন। তাই ৯ তারিখ থেকে যেন এদেরকে ফ্লাড রিলিফ সেন্টারে নিয়ে এসে রাখা হয় তার ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই দিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নদী বাঁধ এলাকার কাজ শেষ হয়ে যাবার পর প্রত্যেকটি কাজের জায়গায় ডিসপ্লে বোর্ড রাখতে হবে যেখানে তাদের পূর্ণ বিবরণ দেওয়া থাকবে।’
বর্ষার সময় যেন ডিভিসি ঝাড়খন্ড থেকে রাজ্যকে না জানিয়ে জল না ছাড়তে পারে তার জন্য ২৪ ঘন্টা মনিটরিং চালানো হবে। এরই মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে একটি সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে রাজ্যে বন্যা কবলিত ১৭৫ টি ব্লককে স্পর্শকাতর হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রত্যেকটি জায়গায় কুইক রেসপন্স টিম তৈরি করে রাখতে বলা হয়েছে।
হাওড়া এবং ব্যারাকপুর ড্রেনেজ সিস্টেম নিয়ে একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি করতে বলা হয়েছে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে। এই বিষয়ে ফিরহাদ হাকিমের সাহায্য নিতে তাঁকে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, সরকারি কাজে কোনরকম দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না। ৩১৭টি ভাঙা নদী বাঁধ তৈরির ক্ষেত্রে তিনি বলেন, এই বাঁধ নির্মাণে কোনরকম দুর্নীতি যেন না হয়। কাজের কোয়ালিটির ওপর তিনি জোর দিতে বলেন। রাজ্যের যেখানে যেখানে সুরজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট এসিপি আছে সেগুলো কিভাবে ঠিক করা যায় তার ওপর জোর দিয়েছেন। এই কাজের জন্য ইঞ্জিনিয়ারদের একটি দল তৈরি করতে বলা হয়েছে। সেখানেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন সৎ ইঞ্জিনিয়ারদের দিয়েই যেন এই কাজ করা হয়। এর পাশাপাশি যশের তাণ্ডবে বহু জায়গায় বহু পশু এবং মাছের মৃত্যু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যেখানে মৃত পশুদের রাখা হয়েছে সেখানে কড়া নজর রাখতে হবে। দেখতে হবে এর মাংস যেন বাইরে কোথাও না বেরিয়ে যায়।’