এক জটিল অঙ্কের মধ্যে এ এফ সি কাপের শেষ ম্যাচে খেলতে নামছে গ্রুপ ডি-র চারটি দল। এখান থেকে একটি দলই যাবে আঞ্চলিক সেমিফাইনালে। মঙ্গলবার সল্ট লেক স্টেডিয়ামে দুটি ম্যাচ আছে। প্রথম ম্যাচে বিকেল সাড়ে চারটায় গোকুলম কেরালার সঙ্গে খেলবে বাংলাদেশের বসুন্ধরা কিংস। আর দ্বিতীয় ম্যাচে এটিকে মোহনবাগানের মুখোমুখি হবে মালদ্বীপের মেজিয়া স্পোর্টস অ্যান্ড রিক্রিয়েশন ক্লাব। চারটি টিমেরই দুটি করে ম্যাচ খেলা হয়ে গেছে। এবং দুটি ম্যাচ খেলার পর চারটি টিমেরই পয়েন্ট তিন। তারা একটি করে ম্যাচ হেরেছে এবং জিতেছে। এখন মঙ্গলবার যদি প্রথম ম্যাচে গোকুলম হারিয়ে দেয় বসুন্ধরাকে তাহলে তারাই চলে যাবে সেমিফাইনালে। পরের ম্যাচে মোহনবাগান যদি মেজিয়াকে হারিয়ে দেয় তাহলেও তারা সেমিফাইনালে যেতে পারবে না। কারণ তখন গোকুলম এবং মোহনবাগান দুই দলেরই পয়েন্ট হবে ছয়। কিন্তু হেড টু হেড ম্যাচে গোকুলম যেহেতু মোহনবাগানকে ৪-২ গোলে হারিয়ে দিয়েছে তাই তারাই চলে যাবে সেমিফাইনালে। আবার মেজিয়া যদি মোহনবাগানকে হারিয়ে দেয়, তাহলে তারাই চলে যাবে সেমিফাইনালে। কারণ হেড টু হেড ম্যাচে মেজিয়ার কাছে হেরে গেছে গোকুলম। তাই শেষ পর্যন্ত কোন দল যাবে সেমিফাইনালে তার জন্য মঙ্গলবার মেজিয়া-মোহনবাগান ম্যাচের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে।
মঙ্গলবার তাই কোন দল ফেভারিট তা বলা যাচ্ছে না। কারণ মরসুমের শেষে সব দলই ক্লান্ত। ফুটবলারদের বিশ্রাম দরকার। যেমন গোকুলম গত সতেরো দিনে সাতটা ম্যাচ খেলেছে। মোহনবাগানকে ৪-২ গোলে হারাবার পর যদি তারা মেজিয়াকে হারাতে পারত তাহলে তাদের সেমিফাইনালে যাওয়ার পথটা সুগম হত। কিন্তু মেজিয়ার কাছে হেরে গিয়ে তারা নিজেদের কাজটা কঠিন করে ফেলেছে। এখন তাদের বসুন্ধরাকে হারাতেই হবে। বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন টিম বসুন্ধরা প্রথম ম্যাচে মেজিয়াকে হারালেও মোহনবাগানের কাছে চার গোল খেয়ে বসে আছে। এই বিশ্রি হারের প্রভাব কাটিয়ে তারা গোকুলমের বিরুদ্ধে কতটা লড়তে পারবে তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। আবার প্রথম ম্যাচে গোকুলমের কাছে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে বসুন্ধরার বিরুদ্ধে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে মোহনবাগান। কিন্তু মাঠে নামার আগেই যদি গোকুলম হারিয়ে দেয় বসুন্ধরাকে তাহলে মোহনবাগানের জয়ের কোনও মূল্যই থাকবে না।
কিন্তু তাদের কোচ জুয়ান ফেরান্দো এ সব নিয়ে ভাবতে চান না। তাঁর লক্ষ্য মেজিয়াকে হারানো। এই ম্যাচেও পাওয়া যাবে না হুগো বুমোকে। তিরি তো মাস সাতেক মাঠের বাইরে। কিন্তু বাকিদের নিয়েই জিততে চান ফেরান্দো। মোহনবাগান গত বছরেও সেমিফাইনালে উঠেছিল। তার পর উজবেকিস্তানের টিমের কাছে ছয় গোল খেয়েছিল। এবার তাদের বিদেশিদের মধ্যে জনি কাউকো এবং রয় কৃষ্ণের ফর্ম যে খুব ভাল তা নয়। ডেভিড উইলিয়ামস ও কার্ল ম্যাকহিউ কাজ চালানোর মতো। কিন্তু লিস্টন কোলাসো আছেন দুরন্ত ফর্মে। দুটো ম্যাচে চারটে গোল করে এখন তিনি টপ স্কোরার। তাঁর সঙ্গে প্রীতম কোটাল, শুভাশিস বসু, সন্দেশ ঝিঙ্গনরাও রয়েছেন ভাল ফর্মে। সব মিলিয়ে ফেরান্দোর ভরসা বিদেশিরা নন, স্বদেশিরাই। এখন দেখার এদের নিয়ে তিনি বাজিমাৎ করতে পারেন কি না। তবে প্রথম ম্যাচে গোকুলম যদি বসুন্ধরাকে হারিয়ে দেয় তখন আর এ সবের দরকার হবে না। মোহনবাগানের ভবিষ্যৎ এখন বসুন্ধরার পায়ে।