ঘাটাল: ১০০ বছরে নতুন করে দাঁত গজিয়েছে ঠাম্মার, অন্নপ্রাশনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মুখে ভাত বৃদ্ধার নাতি-নাতনিদের। অবাক করা এই কাণ্ড ঘাটালের পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা থানার মনোহরপুর দক্ষিণপাড়ার ঘোড়া পরিবারে। পরিবারের সদস্যদের দাবি, ঠাকুমা ভানুমতী ঘোড়ার বয়স ১০০ ছাড়িয়েছে। সম্প্রতি ঠাকুমার নতুন কয়েকটি দাঁত গজিয়েছে। আর সেই আনন্দেই ঠাকুমার আবার অন্নপ্রাশন অনুষ্ঠানের আয়োজন হল।
২২ জুন বুধবার, ভানুমতী দেবীর নাতি-নাতনিদের আয়োজিত এই অন্নপ্রাশন অনুষ্ঠানে, তাঁকে একেবারে সেই শিশুর মতোই, নতুন বস্ত্র পরিয়ে, নতুন বাটিতে পায়েস নিয়ে মুখে পায়েস দিয়ে অন্নপ্রাশন হল। এখানেই শেষ নয়, অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত পাড়া প্রতিবেশীদের জন্যও রীতিমতো জমজমাট খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থাও। মেনুও বেশ লম্বা। চিকেন কষা, রুইমাছের ঝোল আর চিংড়ি মাছের মালাইকারি পাতে পড়ল অভ্যাগতদের।
বড়ো নাতি লক্ষ্মীকান্ত ঘোড়া জানাচ্ছেন, মাত্র ১০ বছর বয়সে দাসপুরের বলুড়ি গ্রামের দেবু মিদ্যার মেয়ে ভানুমতীর বিয়ে হয়, চন্দ্রকোনা থানার মনোহরপুর দক্ষিণপাড়ার গোপাল ঘোড়ার সঙ্গে। স্বামী মারা গেছেন প্রায় ৪৬ বছর আগে। ৪ ছেলেকে নিয়ে শুরু হওয়া সংসারে এখন নাতি-নাতনীদের পাশাপাশি নাতবউ মিলে মোট ৩৪ জনের বেশ বড় পরিবার ভানুমতীর। আজ সেই ভানুমতীর পরিবারের সব্বাই মিলে অন্নপ্রাশনের অনুষ্ঠানে মহানন্দে মাতলেন। অন্নপ্রাশনে নাচ-গান হবে না তাই কখনও হয়? সবাই মিলে খাওয়াদাওয়ার সঙ্গে চলল সাউন্ড বক্স বাজিয়ে নাচও৷
ভানুমতীর বড় ছেলে আশি ছুঁইছুঁই সত্যেশ্বর ঘোড়া জানালেন, তাঁদের থেকে তাঁদের মায়ের শরীর ও মনে এখনও যথেষ্ট জোর। চোখেও এখনও স্পষ্ট দেখেন ১০০’য় সদ্য দাঁত গজানো ভানুমতী। পরিবারের প্রতি সদস্যকে দেখে তাঁদের চিনেও নেন। ঘোড়া পরিবারের ছেলেরা জানালেন, মূলত মায়ের দীর্ঘায়ু কামনাতেই আজকের এই অনুষ্ঠান।