ইতালি–১ ওয়েলস–০
সুইৎজারল্যান্ড–৩ তুরস্ক–১
ইতালিকে সত্যিই ধরা যাচ্ছে না। প্রথম দুটো ম্যাচে যে দল নামিয়েছিলেন রবের্তো মানচিনি সেই দলের আটজনকে বদলেও হারিয়ে দিলেন ওয়েলসকে। একটা টিমের রিজার্ভ বেঞ্চ কতটা শক্তিশালী হলে এবং তাদের উপর কোচের কতটা আস্থা থাকলে ইউরোর মতো টুর্নামেন্টে এই রকম ঝুঁকি নেওয়া যায়। তবে ওয়েলসের ভাগ্য ভাল বলতে হবে দ্বিতীয়ার্দ্ধের শেষ ৩৫ মিনিট তারা দশ জনে খেলেও আর গোল খায়নি। খেলে মুশকিল হত। কারণ গ্রূপ এ-র অন্য ম্যাচে রবিবারেই সুইৎজারল্যান্ড ৩-১ গোলে হারিয়ে দিল তুরস্ককে। এতে ওয়েলস এবং সুইৎজারল্যান্ডের তিন ম্যাচ খেলে হল চার পয়েন্ট। কিন্তু গোল পার্থক্য ভাল থাকায় ওয়েলস (৩-২) চলে গেল প্রিকোয়ার্টার ফাইনালে। সুইৎজারল্যান্ডকে (৪-৫) এখন অপেক্ষা করতে হবে সেরা চারটি তৃতীয় দল হওয়ার জন্য। সেটা গ্রূপ লিগের সব খেলা শেষ না হলে বলা যাবে না।
ইতালি প্রথম দুটো ম্যাচে ছয় গোল করার পর রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় রোমার অলিম্পিক স্টেডিয়ামে পরীক্ষামূলকভাবে দ্বিতীয় দল নামায়। তাদের হয়ে সেরা তিন স্ট্রাইকার সিরি ইম্মোবাইল, ইনসিগনে এবং বেরার্দি নামেননি। এমন কি আগের ম্যাচের জোড়া গোলের নায়ক লোকাতোলিও বিশ্রামে ছিলেন। তাতেও তিন ম্যাচে নয় পয়েন্ট পেয়ে গ্রূপ এ-র শীর্ষে থাকল ইতালি। প্রি কোয়ার্টার ফাইনালে তাদের খেলতে হবে সি গ্রূপের রানার্সের সঙ্গে। ওয়েলস মুখোমুখি হবে বি গ্রূপের দ্বিতীয় টিমের সঙ্গে। ইতালির টিমে এদিন পরিচিত মুখ বলতে মিডফিল্ডে জর্জিনহো এবং সামনে মার্কো ভেরেত্তি ও বেলুচি। এতেই তারা মাত করে দিল ওয়েলসকে। ৩৯ মিনিটে মার্কো ভেরেত্তির ফ্রি কিকে ফ্লিক করে গোল করলেন মাত্তেও পেসিনা। ইতালির সিরি আ-তে আটলান্টার মিডফিল্ডার এই ছেলেটার বয়স মোটে ২৪। এরই মধ্যে ইতালির হয়ে গোল করে ফেললেন। এই জয়ের পর ২০১৮-র বিশ্ব কাপের পর থেকে ইতালি টানা ৩০টা ম্যাচ অপরাজিত রইল। তারা গোল খায়নি গত ১০০০ মিনিটে।
গ্যারেথ বেলের ওয়েলস জানত ইতালির শক্তি। যতই তারা রিজার্ভ বেঞ্চের প্লেয়ারদের নিয়ে টিম গড়ুক, টিমটার নাম তো ইতালি। চার বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দলটাকে তো হেলাফেলা করা যায় না। তাছাড়া তারা জানত এই ম্যাচ থেকে একটা পয়েন্টই তাদের নক আউটে যাওয়ার লাইসেন্স জোগার করে দেবে। তাই নিজেদের রক্ষণকে মজবুত করে তারা আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। দুর্ভাগ্য তাদের ৫৫ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে তাদের মিডফিল্ডার এথান আম্পাদু লাল কার্ড দেখে বেরিয়ে যাওয়ার পরেও দাঁতে দাঁত চেপে তারা ইতালির গোলাগুলি রুখেছে। এ ব্যাপারে তাদের গোলকিপার ওয়ার্ডের প্রশংসা করতেই হবে। আর বলতে হবে মাত্র দশ গজের মধ্যে গোল করার সুযোগ পেয়েও গ্যারেথ বেলের বলটা উড়িয়ে দেওয়া।
বেলরা যখন এক গোলে হারছেন তখন বাকুতে সুইৎজারল্যান্ড ৩-১ গোলে এগিয়ে গেছেন তুরস্কের বিরুদ্ধে। মাত্র ছয় মিনিটে সেফারোভিচ গোল করে এগিয়ে দেন সুইসদের। এর পর জর্দান সাকিরি ২৬ মিনিটে গোল করলে বিরতির সময় ২-০ গোলে এগিয়ে ছিল সুইসরা। বিরতির পর ৬২ মিনিটে তুরস্কের ইভান কাভেচি একটি গোল শোধ করলে ম্যাচ জমে যায়। কিন্তু ছয় মিনিট যেতে না যেতেই জর্দান সাকিরি আবার গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন। তিন ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়েও নক আউটে যাওয়ার জন্য সুইসদের এখন অপেক্ষা করতে হবে।