ঢাকা: দুর্গাপুজোর সময় বাংলাদেশে আক্রান্ত হিন্দুরা৷ গত বৃহস্পতিবার কুমিল্লার একাধিক পুজো মণ্ডপ ও মন্দিরে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং সংঘর্ষের ঘটনায় চারজনের মৃত্যু হয়৷ তার পর থেকে থমথমে পরিস্থিতি ওপার বাংলায়৷ পুজো মণ্ডপে হামলার ঘটনায় ভারতও উদ্বেগ প্রকাশ করে৷ এর পরই দোষীদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ হিন্দুদের আশ্বস্ত করে তিনি জানান, হিংসার ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করবে তাঁর সরকার৷
আরও পড়ুন: ২০ নভেম্বর থেকে জনসাধারণের জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে উত্তরাখণ্ডের বদ্রিনাথ মন্দির
বাংলাদেশের ১৬৯ মিলিয়ন জনসংখ্যার মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ হিন্দু৷ অতীতে সেখানে বসবাসকারী হিন্দুদের উপর আক্রমণ ও হিংসার ঘটনার বহু খবর সামনে এসেছে৷ কিন্তু গত বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার একাধিক পুজো মণ্ডপে ভাঙচুরের ঘটনা হিন্দুদের নিরাপত্তাহীনতাকে প্রকট করে দেয়৷ অভিযোগ, মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মান্ধ কিছু মানুষ পুজো মণ্ডপে কোরান লুকিয়ে রাখে৷ এর পর কোরান শরিফের অসম্মান করা হয়েছে এই অভিযোগে তাঁরা পুজো মণ্ডপে ভাঙচুর চালায়৷ বাদ যায়নি মন্দিরগুলিও৷ ধীরে ধীরে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে হাজিগঞ্জ, বাঁশখালি, শিবগঞ্জ, পেকুয়ায় বিভিন্ন মন্দিরে৷
এই হিংসার ঘটনায় অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়েছে৷ অশান্তি এড়াতে ২২টি জেলায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বাহিনীকে নামানো হয়৷ বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছে, ধরপাকড়ের পর অন্তত ৪৩ জনকে আটক করা হয়েছে৷ কুমিল্লার পুজো মণ্ডপ থেকে কোরান উদ্ধারের ভিডিও প্রথম যাঁরা সোশাল মিডিয়ায় ছেড়েছিলেন তাঁদেরও ধরা হয়েছে৷ কিন্তু এখনও পর্যন্ত সরকারকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি৷ তাছাড়া প্রশ্ন উঠছে, বারবার শুধু হিন্দুদের উপর আক্রমণ কেন? সমালোচকদের অভিযোগ, মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশে হিন্দুদের যে কোনও নিরাপত্তা নেই তা কুমিল্লার ঘটনায় প্রমাণিত৷ শেখ হাসিনা সরকার হিন্দুদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ৷ টুইট করে ঘটনার নিন্দা করেন তসলিমা নাসরিন৷ লেখেন, ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের ছুতো বানিয়ে এটা হিন্দুদের উপর আক্রমণের অছিলা মাত্র৷ আশা করি সরকার সংখ্যালঘুদের বাঁচাবে৷
আরও পড়ুন: ‘কয়েদি নম্বর ৯৫৬’, আর্থার জেলে কীভাবে দিন কাটছে আরিয়ানের?
পুজো মণ্ডপে তাণ্ডবের ঘটনার পরই মুখ খোলেন শেখ হাসিনা৷ জানান, বাংলাদেশে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ একসঙ্গে বসবাস করেন৷ কুমিল্লায় যা ঘটেছে তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে৷ কাউকে ছাড়া হবে না৷ কোন ধর্মের মানুষ এই কাজ ঘটিয়েছে তা দেখা হবে না৷ দোষীদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়া হবে৷ রাজধানী ঢাকার বিখ্যাত ঢাকেশ্বরী মন্দিরে এসে এমনটাই জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী৷ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রচুর তথ্য পাচ্ছি৷ এটা প্রযুক্তির যুগ৷ প্রযুক্তির ব্যবহার করেই দোষীদের ধরা হবে৷’
কুমিল্লার মন্দিরে হামলার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারত৷ বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, আমরা আশা করছি বাংলাদেশ সরকার দ্রুত পদক্ষেপ করবে৷ পুলিশ ও বাহিনীর মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখবে৷