ময়নাগুড়ি: প্রাথমিক অনুসন্ধানের পর যান্ত্রিক ত্রুটিকেই ময়নাগুড়ি (Mainaguri) রেল দুর্ঘটনার কারণ বলে দাবি করলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব (Ashwini Vaishnaw)। রেলের পদস্থ আধিকারিকরা তদন্ত করছেন। বৃহস্পতিবার দুর্ঘটনার পরপরই ভারতীয় রেলের তরফে উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গড়া হয়। তদন্ত শেষ করে সেই কমিটি রিপোর্ট দেবে। তার আগে রেলমন্ত্রী নিজেই দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে কারণ অনুসন্ধান করেন।
গভীর রাতে হাওড়া থেকে স্পেশাল ট্রেনে চেপে শুক্রবার সকালেই ময়নাগুড়ির দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান রেলমন্ত্রী। সাংবাদিকরা দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করলে, অনুসন্ধানের জন্য আধ ঘণ্টা সময় চেয়ে নিয়েছিলেন অশ্বিনী। এই সময়ের মধ্যে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন পরিদর্শন করেন। ট্রেনটির চালকের সঙ্গেও রেলমন্ত্রীর কথা হয়। এর পর রেলের পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে রেলের ট্র্যাক পরিদর্শন করেন।
পরে ফের সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন অশ্বিনী বৈষ্ণব। দাবি করেন, আচমকা ইঞ্জিনের একটি যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে যাওয়ার কারণেই বিপত্তি। তবে, রেল দুর্ঘটনার বিশদ কারণ পরে তদন্তকারী কমিটিই জানাবে বলে অশ্বিনী উল্লেখ করেন।
ময়নাগুড়ি রেল দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণের মধ্যে রেলের ট্র্যাকও ছিল। এদিন সকালে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর তিনি নিশ্চিত করেন রেলের ট্র্যাকে কোনও গন্ডগোল ছিল না।
আরও পড়ুন: ময়নাগুড়ি ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত বেড়ে ৯, ঘটনাস্থলে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী
ঘটনাস্থলে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী
দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে হাসপাতালে রওনা দেন রেলমন্ত্রী। জলপাইগুড়ির সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে রেল দুর্ঘটনায় আহত ৩৬ জন ভর্তি রয়েছেন। এ ছাড়াও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন আরও ৬ জন। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভর্তি থাকা ৬ জনেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।
উদ্ধারকাজ শেষ হওয়ার কথা এদিন সকালেই রেলের তরফে ঘোষণা করা হয়। দুর্ঘটনার জেরে বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেসের যে ১২টি বগি লাইনচ্যুত হয়, তা যুদ্ধকালীন তত্পরতায় সরানো হচ্ছে। রেল ট্র্যাক পরিষ্কার করতে গ্যাস কাটার ও ক্রেন ব্যবহার করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: রাতে স্পেশাল ট্রেনে শুক্রবার সকালে ময়নাগুড়ির ঘটনাস্থলে আসছেন
ময়নাগুড় রেল দুর্ঘটনায় সরকারি ভাবে ৯ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। আহতের সংখ্যা ৪২। বৃহস্পতিবারই ৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছিল। এদিন সকাল পর্যন্ত আরও ৩ জন মারা গিয়েছেন।
দুর্ঘটনায় হতাহতদের জন্য ইতিমধ্যে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে রেল। মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। গুরুতর আহতরা পাবেন ১ লক্ষ টাকা। অল্প আহতদের জন্য মাথাপিছু ২৫ হাজার টাকা।
বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ৪২ কিমি দূরে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস৷ লাইনচ্যুত হয় এক্সপ্রেসের ১২টি কোচ৷
