সারাদিনের ক্লান্তি দূর করতে ধূমায়িত এক কাপ কফিই যথেষ্ট! একমাত্র কফি লাভার- রাই বোঝেন গরম কফির এই ঘ্রানের জাদু!
তবে ‘আপ রুচি খানা’ প্রবাদ যতই জনপ্রিয় হোক না কেন আপনার কফির প্রতি এই প্রেমে প্রায়শই বাঁধ সাধেন শুভানুধ্যায়ীরা। অনেকে আবার উপদেশের বন্যা বইয়ে কফির অপকারিতা তুলে ধরে বদলে চা খাওয়ার বিষয়ে জোড় দেন। যারা কফির প্রতি সেভাবে আকৃষ্ট নন তাদের অনেকের মুখেই শোনা যায় কফি নিয়ে বেশ কিছু ধারণা। চিকিত্সকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এর মধ্যে অধিকাংশই হল মিথ কিংবা ভ্রান্ত ধারণা।
আরও পড়ুন: জানেন কি দিনে ঠিক কতটা কফি খাওয়া যেতে পারে?
কফির প্রতি আপনার অমোঘ টানে যাতে এই মিথ প্রভাব না ফেলে তাই এই সব ভ্রান্ত ধারণার সত্যতা জেনে রাখুন –
ভ্রান্ত ধারনা: কফির আশক্তির থেকে সাবধান
সত্যতা: অনেকেই অনায়াসেই বলে থাকেন কফির বদলে চা খান কারন কফিতে আশক্তি তৈরি হয়। এর কোনও বিজ্ঞানসম্মত যুক্তি এখনও পাওয়া যায়নি। তবে এটা ঠিক কফিতে ক্যাফেন থাকে। এই ক্যাফেন আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপ্ত করে। একাগ্রতা বাড়ায়। তাই কফি খাওয়ার অভ্যেস থাকলে একটা নির্ভরতা তৈরি হয়। তবে এটা চা বা অন্য কোনও খাবার যা নিয়মিত খাওয়া হয় সেটা খেলেও হতে পারে। এটা অভ্যের ব্যাপার। একে আশক্তি বলা চলে না। প্রতিদিন নির্দিষ্ট মাত্রায় কফি খাওয়া যেতেই পারে।
ভ্রান্ত ধারনা: কফি খেলে ক্যানসার হয়
সত্যতা: এর কোনও বিজ্ঞানসম্মত যুক্তি নেই। বরং এর উল্টো কথা বলেন অনেক নিউট্রিশনিস্টরা। জানা গেছে কফিতে থাকা একটি বিশেষ পদার্থ কয়েক রকমের ক্যানসার রোধ করতে ভীষণ কার্যকরী।
আরও পড়ুন: জানেন কি কীভাবে অ্যালঝাইমার ও পার্কিনসনের মত অসুখ দূরে রাখে কফি?
ভ্রান্ত ধারণা: ক্যাফেন শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক
সত্যতা: সত্যিটা এর একেবারে উল্টো। শরীর ভাল রাখতে ক্যাফেনের বেশ কিছু কার্যকারিতা রয়েছে। এটা একাগ্রতা বাড়াতে সাহয্য করে, শরীরে শক্তির সঞ্চার করে। মাথা ব্যথায় কাজে আসে। পরিমিত পর্যায় নিলে ওজন কমাতে সাহায্য করে। মস্তিষ্কের কার্যকলাপে সাহায্য করে। আলঝাইমার ও পর্কিনসনের মতো সমস্যাতেও কফি বেশ কার্যকরী। তবে মাত্রাতিরিক্ত হলে সমস্যা হতে পারে। আর এই বিষয়টি যে কোনও খাদ্যের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
ভ্রান্ত ধারণা: সন্তান ধারণের সময় কফি কোনওমতেই খাওয়া চলবে না
সত্যতা: সন্তানসম্ভবাদের পরিমিত কফি খাওয়ার উপদেশ দেন চিকিত্সক এটা ঠিকই। তবে এখনও পর্যন্ত ফার্টিলিটি ও ক্যাফেনের মধ্যে সরাসরি কোন যোগ নেই বলেই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রেগন্যান্সির সময় পরিমিত মাত্রায় কফি খাওয়া যেতেই পারে। তবে এই সময় কোনও জটিলতা থাকলে, শুধু কফিই না বেশ কিছু খাবারের ক্ষেত্রে বাধা নিষেধ থাকতে পারে। সেটা ব্যক্তি বিশেষের ওপর নির্ভরশীল।
তাই কফি লাভারদের অযথা চিন্তা করার দরকার নেই। এই শীতে শরীর মন চাঙ্গা করতে নিশ্চিন্তে কফির কাপে চুমুক দিন। মন ভরে নিন কফির মন মাতানো ঘ্রাণ!
আরও পড়ুন: শুধু কফির কাপে চুমুক? রূপচর্চাও সারুন কফি দিয়ে
(ছবি সৌজন্য: Pexels/Unsplash)