শিলিগুড়ি: মত বদলে শেষ পর্যন্ত শিলিগুড়ি পুরসভার ভোটে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিলেন সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য। মঙ্গলবার দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্ট বামেদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে । তাতে দেখা যাচ্ছে, অশোকবাবু ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী হয়েছেন। এদিন থেকে তিনি ভোটের প্রচারেও নেমে পড়েছেন।
এর আগে বয়সের কারণে তিনি জেলা কমিটি থেকে সরে এসেছেন। তার পরেই অশোকবাবু ঘোষণা করেন, এবার আর তিনি পুরভোটে লড়াই করবেন না। দিন কয়েক আগে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য তাঁকে ফোন করে ভোটে দাঁড়ানোর কথা বলেন এবং ভোটের দায়িত্বও নিতে বলেন। সিপিএমের জেলা কমিটিও একই অনুরোধ করেন শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্যকে। সেই অনুরোধ এবার তিনি ফেলতে পারেননি।
আরও পড়ুন: পুরভোট থেকে বাদ, হাওড়া পুরসভার সামনে বামেদের বিক্ষোভ
মঙ্গলবার অশোকবাবু সাংবাদিকদের বলেন, ‘অনেক সমও ব্যক্তির থেকে দল বড় হয়ে দাঁড়ায়। দল যখন বলেছে, তখন মত বদল করলাম। দলের সিদ্ধান্ত মাথা পেতে নিলাম। দলের সিদ্ধান্ত মেনেই এদিন থেকে প্রচারেও নেমে পড়েন প্রবীণ সিপিএম নেতা। তাঁর দাবি, এবার শিলিগুড়ি পুরসভার ভোটে তাঁরাই জিতবেন।
এবারও শিলিগুড়ি পুরসভায় বাম এবং কংগ্রেস জোট বেঁধে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কে কত আসনে লড়বে, তা নিয়ে সিপিএম ও কংগ্রেসের মধ্যে আলোচনা চলছে। বামেরা প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে দিলেও কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতায় সমস্যা হবে না বলে সিপিএম নেতাদের দাবি। ২০১৫ সালে শিলিগুড়ির পুরভোটে বাম এবং কংগ্রেসের মধ্যে কোনও প্রাক নির্বাচনী সমঝোতা হয়নি। ভোটের দিন শাসকদলের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বামেরা এবং কংগ্রেস যৌথভাবে পথে নেমেছিল। পরে বাম-কংগ্রেস পুরবোর্ড গঠন করে। তখন থেকে রাজ্য রাজনীতিতে ‘শিলিগুড়ি মডেল’ চর্চার বিষয় হয়ে ওঠে। এবার বিধানসভা ভোটে বাম-কংগ্রেস সমঝোতা হয়নি, সমঝোতা হয়নি কলকাতার পুরভোটেও। অন্য সব পুরসভার ভোটে বাম-কংগ্রেস সমঝোতার বিষয়টি দুই দলের রাজ্য নেতৃত্বই স্থানীয় নেতাদের উপর ছেড়ে দিয়েছেন। শিলিগুড়ির বাম এবং কংগ্রেস নেতারা সেই ‘শিলিগুড়ি মডেল’-এর উপরই আস্থা রেখেছেন।
আরও পড়ুন: প্রার্থিতালিকা ঘোষণার আগে আসানসোলে নির্দল প্রার্থী হয়ে মনোনয়ন তুললেন বিজেপি নেতা
এদিন বহরমপুরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘শিলিগুড়ির ভোটে বামেদের সঙ্গে জোট হচ্ছে কংগ্রেসের। স্থানীয় নেতৃত্ব চাইছেন বলেই জোট হচ্ছে। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে যে জোট হয়েছিল, তা থেকে কংগ্রেস সরে আসেনি। অন্যান্য পুরসভার ভোটে বামেরা জোট চাইলে স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটাই চূড়ান্ত।’