সুন্দরবন: কুলতলির বাঘ (Kultali Tiger) খাঁচাবন্দি হল না। টানা চারদিন ধরে এক ম্যানগ্রোভ জঙ্গল থেকে আরেক জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কোন অবস্থাতেই খাঁচাবন্দি করতে পারছে না বন দফতর (Forest Department)। শনিবার কুলতলি থানার কেল্লা পর্যটন কেন্দ্রের কাছে লুকিয়ে ছিল বাঘবাবাজি। তাকে ধরতে গিয়ে নাজেহাল বন দফতরের কর্মীরা৷ বনদফতর থেকে বাঘ ধরার জন্য ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মোতালেফ মোল্লাকে৷ খোঁজাখুঁজির সময় বাঘের গর্জন শুনে পালাতে গিয়ে তিনি জখম হন৷ তাঁকে গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷
বন দফতরের পক্ষ থেকে দুটি খাঁচা পাতা হলেও তাতে ধরা সে দিল না। কুলতলি কেল্লার জঙ্গল থেকে রবিবার আবার মধুখালি এলাকায় অর্থাৎ ক্রমাগত শহরমুখী হচ্ছে এই বাঘ। বনকর্মীদের প্রাথমিক ধারণা, দিকভ্রষ্ট হয়েছে বাঘটি। গভীর জঙ্গলে ফিরে যেতে চাইছে। তাই এক জঙ্গল থেকে আরেক জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
পর্যটকদের সুরক্ষায় কুলতলি কেল্লা বন্ধ করে দিয়েছে পুলিস৷ শীতের মরশুমে এখানে পিকনিক করতে আসেন পর্যটকরা৷ বাঘের আতঙ্কে সেই কেল্লায় আপাতত পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ৷ বর্ষশেষের মুখে কেল্লা বন্ধ করে দেওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েন স্থানীয়রা৷ যাকে ঘিরে এত আতঙ্ক, তাকে অবশ্য এলাকায় দেখা যায়নি৷ কিন্তু এক জন্তুর পায়ের ছাপ দেখে কুলতলির (Kultali Tiger) বাসিন্দাদের বদ্ধমূল ধারণা, লোকালয়ের আশপাশেই কোথাও ঘাপটি মেরে বসে আছে বাঘ। সেই থেকে দক্ষিণরায়ের আতঙ্কে ভয়ে কাঁটা কুলতলির মানুষ৷ খবর পেয়েই বাঘ ধরতে জাল বিছিয়েছেন বন দফতরের (Forest Department) কর্মীরা৷
গত বৃহস্পতিবার গরানকাঠি ৫ নম্বর এলাকায় মাছ ধরতে গিয়ে বাঘের ছাপ দেখতে পান দুই মৎস্যজীবী৷ বন দফতরকে খবর দেন তাঁরা৷ বন দফতরের কর্মীরা এসে জাল দিয়ে মাতলা নদী লাগোয়া ম্যানগ্রোভ জঙ্গল ঘিরে দেন৷ টোপ দিয়ে বাঘ ধরতে পাতা হয় তিনটি খাঁচাও৷ তারপর শনিবার সকালে বাঘের গতিবিধি দেখতে বেরন কর্মীরা৷ মাতলা নদী থেকে পিয়ালি নদীর দিকে এগোতেই দেখা মেলে বাঘের পায়ের ছাপ৷ পিয়ালি নদীর ধার ধরেই বনকর্মীরা পৌঁছন কেল্লায়৷
আরও পড়ুন: লঞ্চে আগুন : মালিকসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বনকর্মীরা নিশ্চিত ছিলেন কেল্লার কাছেই কোথাও লুকিয়ে আছে বাঘটি৷ তার পায়ের ছাপ খুঁজে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বনকর্মীরা বাঘের গর্জনও শুনতে পান৷ এক বনকর্মী জানিয়েছেন, কেল্লার কাছে পিয়ালি নদীর ধারে যেতেই বাঘের গর্জন শোনা গিয়েছে৷ কুলতলি থানার পক্ষ থেকেও কেল্লা এলাকায় মাইকে প্রচার করা হয়৷ বাঘ না ধরা পর্যন্ত এলাকার কোনও বাসিন্দাকে নদীর চরে যেতে বারণ করে দিয়েছে পুলিস৷
কেল্লা এলাকায় গতকাল যেখানে জাল দিয়ে ঘেরা হয়েছিল, সেই জাল খুলে ফেলে আবার নতুন জায়গায় জাল পাতা শুরু করল বন দফতর। এখন দেখার কখন এই বাঘ খাঁচাবন্দি হয়।