নয়াদিল্লি: বৃহস্পতিবার ছিল সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের (Winter Session of Parliament) শেষ দিন৷ তার একদিন আগেই লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা (Om Birla) এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু (Rajya Sabha Chairman Venkaiah Naidu) অনির্দিষ্টকালের জন্য সভা মুলতুবি করে দিলেন৷ যার ফলে নির্ধারিত সময়ের একদিন আগেই বুধবার শেষ হয়ে যায় এবারের শীতকালীন অধিবেশন৷ এবারের অধিবেশনে রাজ্যসভায় প্রত্যাশিত কাজ না হওয়া নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন বেঙ্কাইয়া নাইডু৷ সাংসদদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের বলব আত্মসমীক্ষা (Venkaiah Naidu Introspect) করে জানার চেষ্টা করুন কোথায় আমাদের ভুলভ্রান্তি হয়েছে৷’
এবারের শীতকালীন অধিবেশনে ২৪ দিনের মধ্যে ১৮ দিন কাজ হয়েছে৷ এই ১৮ দিনে ১৩টি বিল পেশ হয়েছে৷ যার মধ্যে দুই কক্ষ মিলিয়ে পাশ হয়েছে ১১টি বিল৷ কাজের নিরিখে রাজ্যসভার চেয়ে লোকসভার পারফরম্যান্স বেশ ভালো৷ যা নিয়ে প্রশংসা শোনা গিয়েছে লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লার মুখে৷ তিনি জানান, মোটের উপর লোকসভায় ৮২ শতাংশ কাজ হয়েছে৷
শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনই বিরোধীদের বার্তা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, সরকার সব বিষয়ে খোলা মনে আলোচনা করতে প্রস্তুত৷ তিনি সভার কাজকর্ম ঠিকমতো পরিচালনার জন্য বিরোধীদের সহযোগিতা চান৷ কিন্তু তাল কাটে অধিবেশনের দ্বিতীয় দিন৷ বাদল অধিবেশনে অসংসদীয় আচরণের জন্য বিরোধী দলের ১২ জন রাজ্যসভার সাংসদকে সাসপেন্ড করা নিয়ে সংসদে সুর চড়ায় বিরোধীরা ৷ এই ঘটনা বিরোধীদের আরও কাছাকাছি আসার সুযোগ করে দেয়৷ তারা একজোট হয়ে মোদি সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে৷ বিরোধীদের প্রশ্ন, বাদল অধিবেশনে অপরাধের শাস্তি শীত অধিবেশনে কেন? সরকার পক্ষ তখন জানায়, সাংসদদের তাঁদের আচরণের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে৷ নইলে পুরো অধিবেশন তাঁদের সভার বাইরে কাটাতে হবে৷ অনড় বিরোধীরা ক্ষমা চাওয়া তো দূর, উল্টে নানা ইস্যুতে তারা সরকারকে প্যাঁচে ফেলার চেষ্টা করে৷ লখিমপুর ঘটনা নিয়ে সবচেয়ে বেশি উত্তাল হয়েছে সংসদ৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির পদত্যাগের দাবি জানায় বিরোধীরা৷ এর জেরে বারবার পণ্ড হয় সভার কাজকর্ম৷
আরও পড়ুন: Ram Mandir: রাম মন্দিরের জমি কিনছে জনপ্রতিনিধি, সরকারি আধিকারিকরা
তাই নির্ধারিত দিনের একদিন আগেই এ বছরের মতো সংসদ মুলতুবি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু৷ এবারের অধিবেশনে রাজ্যসভার খারাপ পারফরম্যান্স নিয়ে অখুশি তিনি৷ সে কথা জানিয়ে নাইডু বলেন, ‘সভার কাজকর্ম আরও ভালো হতে পারত৷ আমাদের আত্মসমীক্ষা করে দেখতে হবে কোথায় কোথায় ভুল হয়েছে৷ রুলস, রেগুলেশন, প্রসিডিওর, সংসদীয় আচরণ, শিষ্টাচার এই সবই বিবেচনা করতে হবে৷ আপনারা সবাই আত্মসমীক্ষা করুন৷ ভাবুন, কী ভাবে কাজ করলে এই অধিবেশনে আমরা আরও ভালো কাজ করতে পারতাম৷ যে কারণে আমাকে এত কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হল, তা নিয়ে আমি বিস্তারিত ব্যাখ্যায় যাচ্ছি না৷’